চাঁদপুর : ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন মঙ্গলবার (২১ মে) অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে তিন উপজেলার ২৮৭টি কেন্দ্রের ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম ভোট কেন্দ্র পৌঁছানো হয়েছে। সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে ভোট কেন্দ্রে। তিন উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ২৬জন প্রার্থী।
সোমবার (২০ মে) দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তার সার্বিক তত্ত্ববধানে চাঁদপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে সদর উপজেলার ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক নিরাপত্তার মাধ্যমে ১৩৪টি কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। একইভাবে হাজীগঞ্জ ৮৮টি ও শাহরাস্তির ৬৫টি ভোটে কেন্দ্রের সরঞ্জাম উপজেলা পরিষদ থেকে কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫জন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ২জ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ২জন। এই উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৭ হাজার ১১১জন। পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৬ হাজার ৮০৩জন। মহিলা ভোটার ২লাখ ৩০৭জন। হিজড়া ভোটার ১জন। ভোট কেন্দ্র ১৩৪টি।
চাঁদপুর সদরে চেয়ারম্যান পদে মো. আইয়ুব আলী (দোয়াত কলম), মো. হুমায়ুন কবির (ঘোড়া), রাকিব মাঝি (আনারস), মিজানুর রহমান ভুইয়া কালু (মটর সাইকেল) ও মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম-নাজিম দেওয়ান (কাপ-পিরিচ)।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হলেন ৩ জন। আবুল বারাকাত মো. রেজওয়ান (চশমা), মো. নুরুল হায়দার (টিউবওয়েল) ও মো. হারুনুর রশিদ হাওলাদার (তালা)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হলেন দুই জন। রেবেকা সুলতানা-মুন্না (পদ্ম ফুল) ও শিপ্রা দাস (ফুটবল)।
চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫জন থাকলেও মিজানুর রহমান ভূঁইয়া কালু (মটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে রোববার (১৯ মে) বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলায় পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৩জন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কামরুজ্জামান সুমন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই উপজেলার ১ টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২লাখ ৮৬ হাজার ৯৪৯জন। পুরুষ ভোটার ১লাখ ৪৯ হাজার ২২০জন। মহিলা ভোটার ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭২৯জন। ভোট কেন্দ্র সংখ্যা ৮৮টি।
হাজীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে (আনারস) প্রতীকে আলহাজ¦ হেলালউদ্দিন মিয়াজী, হাজী জসিম উদ্দিন (দোয়াত কলম) ও আবু সুফিয়ান রানার প্রতিক (ঘোড়া)। অপর দিকে নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন কামরুজ্জামান সুমন ছাড়া সবাই মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রাবেয়া আকতার (প্রজাপতি) প্রতীক এবং রুবি আকতার (ফুটবল) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ২জন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২লাখ ৬ হাজার ২৪১জন। পুরুষ ভোটার ১লাক ৪হাজার ১১জন। মহিলা ভোটার ১ লাখ ২ হাজার ২২৯জন। হিজড়া ভোটার ১জন। ভোট কেন্দ্র ৬৫টি।
শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রকৌশলী মকবুল হোসেন পাটোয়ারী (ঘোড়া), ওমর ফারুক রুমি (আনারস)। ভাইস চেয়ারম্যান পদে তোফায়েল আহমেদ ইরান (উড়োজাহাজ), এমদাদুল হক মিলন (চশমা), ওমর ফারুক পাটওয়ারী (টিউবওয়েল), ইব্রাহীম খলিল (মাইক), নুরে আলম (তালা)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কামরুন্নাহার কাজল (হাঁস), নাজমুন্নাহার স্বপ্না (কলস), হাছিনা আক্তার (প্রজাপতি) ও হনুফা আক্তার (ফুটবল) প্রতীক নিয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তোয়ায়েল হোসেন নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে বলেন, তিন উপজেলায় নির্বাচনের আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি আছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সার্বিক দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেউ ভোট কেন্দ্রে এসে আইন শৃঙ্খলার অবনতি করলে তাকে সর্বোচ্চ আইনের আওতায় আনা হবে।
নির্বাচনের সর্বশেষ ব্রিফিং প্যারডে জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চাই। এক্ষেত্রে ইভিএমসহ সরকারি যত সম্পদ আছে সবকিছুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। একই সাথে ভোটারদের কেন্দ্রে এসে ভোট দেয়ার শেষ পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আমাদের নির্বাচনী এলাকায় ইতোমধ্যে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও আনসার বিডিপি কাজ শুরু করছেন।
ফম/এমএমএ/