হেমন্তের কবিতা

— যুবক অনার্য
একদিন হেমন্ত বিকেলে পাতা ঝরেছিল
একদিন হেমন্ত বিকেলে দেখা হয়েছিল
হয়নি তো কথা – চোখের দিকে তাকালেই
সব কথা অর্থহীন মনে হয়।
তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে হাফপ্যান্ট পরে
আমার পরনেও হাফপ্যান্ট ছিল
পাতা ঝরে ধান পেকে সোনা রঙ হয়
যুবতী যুবতী বধূ আর পুরনো বধূরা ধান ভানে
গোলা ভরে যায়
এক পা দুই পা করে সময় গড়ায়
মাস যায় বছরও কেটে যায়
তুমি মাধ্যমিক পেরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে
আমাদের গাঁয়ের ইশকুলে।
পেরিয়ে বিদ্যালয়
তারপর মহাবিদ্যালিয়ের উঠোন আমাদের গাঁয়
আর আমি বহু দূর রঙিন শহরজুড়ে তোমার সংগে
দেখা সেই হেমন্ত বিকেলের স্মৃতি
বুকের মধ্যে নিয়ে ঘুরি
তোমাকে হয় না বলা তা
বলতে পারিনি কোনো দিন।
একদিন গাঁয়ে ফিরে শুনি –
হেমন্তের বিকেলে তোমার বিয়ে হয়ে গেছে
তুমি চলে গেছো দূরের কোনো দেশে
কবিতা পাঠ করে যে- পৃথিবীরে মায়াবী নদীর
পাড়ের দেশ মনে হতো
মনে হয়- মায়াবী নদীর পাড়ের দেশ
পৃথিবী কখনো নয়
পৃথিবী- যেনো হেমন্ত- বিকেল কোনো
যে- বিকেলে হাফপ্যান্ট পরা শিশুগুলো একদিন
বিনা নোটিশেই টের পেয়ে যায়-
একটি ছেলে একটি মেয়েকে সমগ্র পৃথিবী ভেবে
লুকিয়ে রাখে যত্ন করে বুকের পকেটে তার
একটি মেয়ে একটি ছেলেকে সমগ্র পৃথিবী ভেবে
যত্ন করে লুকিয়ে রাখে বুকের দেরাজে তার
তারপর কোনো এক হেমন্তের বিকেলে ছেলেটি
হারিয়ে যায়- দূরের কোনো নগর থেকে রেললাইন
পার হয়ে অন্য নগরে এক
মেয়েটি হারিয়ে যায় সানন্দাঘাট পার হয়ে
দূর কোনো গাঁয়
পৃথিবীরে বেদনার দ্বীপ মনে হয়
পৃথিবীরে ডাকারপরা রাত মনে হয়
পৃথিবীরে হেমন্ত বিকেলের কৃতদাস বলে মনে

ফোকাস মোহনা.কম