চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ দরপত্র ছাড়া বিক্রি! ব্যবসায়ী আটক

ছবি: ফোকাস মোহনা.কম

চাঁদপুর: বাংলাদেশ মৎস্য গবেষনা ইনস্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুরের গোডাউনে রক্ষিত থাকা পুরাতন সরকারি প্রায় ৫লাখ টাকা মূল্যমানের বড় আকারের দুটি মটর, দুটি ইঞ্জিন, একটি সেচ পাম্প, লোহার পাইপসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কোন প্রকার দপরত্র আহবান ছাড়া ও সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা নাকরে অবৈধভাবে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (২৮ মে) বিকেলে চাঁদপুর শহরের পুরাণ বাজার ফাঁড়ি পুলিশ পুরানবাজার কলেজ রোডের লিটন গাজীর ভাঙারি দোকান ও গোডাউন থেকে উদ্ধার করে।

উদ্ধার কাজে নেতৃত্ব দেন পুরানবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমিরুল ইসলাম। তিনি ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী মো: লিটন গাজীকে (২৬) আটক করেন।

লিটন পুরান বাজার এলাকার আব্দুর রব গাজীর ছেলে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন এই ধরণের চোরাই মালামাল বেচাকেনার সাথে জড়িত।

তার পিতার নাম আব্দুর রব গাজী,তার বাড়ী শহরের পরানবাজার এলাকায়। এলাবাসীর অভিযোগ সে দীর্ঘদিন যাবত এভাবে অবৈধ ও চোরাই মালামাল ক্রয় ও বিক্রি করে যাচ্ছে।

একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষনা ইনষ্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুরের এ সব মূল্যবান প্রায় ৫ লাখ টাকার যন্ত্রাংশের মালামাল সরকারি নিয়ম বর্হিভূতভাবে স্থানীয় কর্মকর্তাদের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ পন্থায় বিক্রি করা হয়। নদী কেন্দ্রের ক্ষেত্র সহকারী মো: নূরুজ্জামান, হেচারি বিভাগের এলএলএম (পিয়ন) সামছুল আলম মানিক ও তার মেয়ের জামাতা আব্দুর রহমানের সহায়তায় এক জোট হয়ে এক প্রকার চোরাইভাবে গোপনে ভাঙারি ব্যবসায়ীকে এ মৎস্য গবেষনা ইনষ্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুরে এনে দরকষাকষির মাধ্যমে রোববার (২৮মে) দুপুর দেড় টার দিকে ১ লাখ ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে। জিজ্ঞাসাবাদে এই কথা স্বীকার করেন ভাঙারি ব্যবসায়ী লিটন গাজী ও সামছুল আলম মানিকের মেয়ের জামাতা আব্দুর রহমান।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষনা ইনষ্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুরের অফিস পাড়ার ভিতরে এ কেন্দ্রের সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখা গেছে।

সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ক্ষেত্র সহকারী মো: নুরুজ্জামানের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলবো না। আমি এখন অফিসের কাজে সিলেটে আছি। সোমবার চাঁদপুর এসে এ বিষয়ে কথা বলব। সংবাদ করার প্রয়োজন নেই।

অফিসের হেচারী বিভাগের পিয়ন সামছুল আলম মানিকের মেয়ের জামাতা আব্দুর রহমান বলেন, আমি বিভিন্ন স্থান থেকে পুরাতন রড ক্রয় করে চাক্কি তৈরী করি। আমার শ^শুরের অনুরোধে কয়েকজন ভাঙারি ব্যবসায়ীকে মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউট নদী কেন্দ্রে আনলে তারা ক্ষেত্র সহকারী নুরুজ্জামানের সাথে দরদামের মাধ্যমে ১ লাখ ৭ হাজার টাকায় লিটনের কাছে এ সব মালামাল বিক্রি করে।

চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, মালামাল জব্দ করে ঘটনাস্থলে একটি রুমে তালা মেরে রাখা হয়েছে। তারা দপত্রের কি কাগজপত্র আছে তা দেখাবে। কাগজপত্র দেখালে বলতে পারব কিভাবে বিক্রি হয়েছে।

এই বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুরের প্রধান ড. মো: আমিনূল ইসলাম এর মুঠো ফোনে কল করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম