চাঁদপুর: চাঁদপুর সদর উপজেলার সাহাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও আশিকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন পাটওয়ারীর পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকবৃন্দ।
অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল ১১টায় উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের সাহাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এর আগে বিদ্যালয় মিলনায়তনে এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের অংশগ্রহণে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান স্বপন মাহমুদ, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. এনামুল হক, আহসান হাবীব, রাশেদ নিজাম রাজু, সাইফুল ইসলাম, মো. রাশেদ হাওলাদার, মামুন মিজি, বর্তমান শিক্ষার্থী নোমান অভি, সাথী আক্তার ও মো. ইউসুফ।
মানববন্ধন ও মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, প্রধান শিক্ষকের মনগড়া দায়িত্ব পালনে ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একসময় শিক্ষার হার ছিল প্রায় ৯০ শতাংশের মত। তা এখন নেমে দাড়িয়েছে ২০-৩০ শতাংশে। দুই পক্ষের মামলা জটিলতার কারনে অনেক বছর যাবত ম্যানেজিং কমিটিহীন এ বিদ্যালয়। অব্যবস্থাপনায় বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনসহ আশপাশে রাতের বেলায় মাদকসেবিদের আড্ডা জমে। বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্দিষ্ট অনেক শিক্ষক নেই, যা শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই সমস্যাকর। ১২ জন শিক্ষকের মধ্যে আছে মাত্র ৭জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। এছাড়াও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীরও সংকট রয়েছে এ বিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীদের জন্য নেই ভালো একটি টয়লেটের ব্যবস্থা। শ্রেনী কক্ষগুলোতে নেই পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক পাখা। যা গরমের সময় শিক্ষার্থীরা খুবই কস্ট পেতে হয়।
বক্তারা আরো বলেন, গত ১২ বছরে তিনি ঠিকমতো বিদ্যালয়ে আসেন না এবং ক্লাশও করেন না। গত ৫ আগস্ট থেকে তিনি আত্মগোপনে থাকলেও এর আগে থেকেই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। বিদ্যালয়ের সভাপতি কিংবা একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক না থাকায় অন্যান্য শিক্ষকরা তাদের মত করে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা চালিয়ে নিচ্ছেন। তারা বলেন, প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেন পাটওয়ারীর স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হয়েছে বিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থী সহ এলাকার জ্ঞানী-গুণীজন। তার অনিয়ম-দুর্নীতির শেষ নেই। আওয়ামী লীগ দলের প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক অবিচার করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন তিনি। সেই সাথে তিনি একত্রে ইউপি চেয়ারম্যান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদারির দায়িত্ব কিভাবে পালন করেন। শিক্ষককে স্বৈরাচার আখ্যা দিয়ে দ্রুত পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, পদত্যাগ না করলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামাল হোসেন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক কবিরাজ, ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মজিব কারী, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আশেক এলাহী সহ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকার সচেতন মহল। এসময় প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের উক্ত অভিযোগের কথা শুনে সবাইকে সাথে নিয়ে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন মাহমুদ।
ফম/এমএমএ/