নতুন সাইকেল পেয়েও মুখে হাসি নেই শিক্ষার্থীদের

চাঁদপুর:  চাঁদপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে সাইকেল বিতরণ করা হয়েছে। নতুন সাইকেল হাতে পেয়ে মুহূর্তেই শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ফুটে ওঠে আনন্দের ঝলক। তবে সেই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। শিক্ষার্থীদের মাঝে নিম্নমানের বাইসাইকেল বিতরণকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১২৫ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল বিতরণ করা হয়।

এদিকে বিতরণকৃত সাইকেলগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। অভিযোগ করা হয়, প্রতিটি সাইকেলেই একাধিক ত্রুটি রয়েছে। ১২৫টি সাইকেলের একটিতেও নেই বেল। এছাড়া চাকা, ব্রেক, চেইন, প্যাডেল, মাডগার্ড, এমনকি সাইকেল রাখার স্ট্যান্ড পর্যন্ত নিম্নমানের হওয়ায় ব্যবহার উপযোগী নয় বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।

সবচেয়ে বড় বিড়ম্বনা ছিল যে, একটিও সাইকেলে হাওয়া দেওয়া হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা সাইকেল হাতে পেয়েই বিপাকে পড়েন। অনেকেই বলেন, সাইকেলের সরঞ্জাম এত নড়বড়ে যে খুলে পড়ার উপক্রম তৈরি হয়। ফলে নিরাপদে চলাচল করা সম্ভব নয়।

কৃতি শিক্ষার্থীদের জন্য এ ধরনের অব্যবহারযোগ্য বাইসাইকেল বিতরণকে “উদ্যোগের অপব্যবহার” ও “অবহেলার চরম দৃষ্টান্ত” হিসেবে দেখছেন শিক্ষকরা। তারা মনে করছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ হারাবে বরং উপকৃত হওয়ার বদলে বিড়ম্বনার শিকার হবে। শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে ঠিকাদার প্রত প্রকৃত চিত্র উন্মোচনের দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে মানসম্মত বাইসাইকেল প্রদানের জোর দাবি জানান তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের সাইকেল দেওয়া হয়েছে আমরা খুব খুশি কিন্তু চাইকেলে লাগানো সরঞ্জামগুলো খুব দুর্বল। দুই চাকায় হাওয়া নেই। ঠেলে ঠেলে চাইকেল নিতে হচ্ছে। আমাদের সাইকেলের একটিতেও বেল নেই। এখান থেকে দোকানে নিয়ে সাইকেলের কাজ করাতে হবে।

এদিকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মো. মনিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সাইকেল ঠিকাদারি কাজে আমি ছিলাম না। কে বা কারা সাইকেলের ঠিকাদারি কাজ করেছে, এমন প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি। পরবর্তীতে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

অন্যদিকে সদর উপজেলা প্রকৌশলী রাহাত আমিনের সাথে সাইকেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে গিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যান। পরবর্তীতে তাকে ফোন দিলে তিনি জানান, কতটি সাইকেল দেয়া হয়েছে এবং সাইকেলের বরাদ্দ সম্পর্কে তিনি অবগত নন। পরে অফিসে আসলে ফাইল দেখে বলা যাবে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভাবে নীতিমালা অনুয়ায়ী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে সাইকেল টেন্ডারের কাজ দেওয়া হয়েছে। এই কাজে কোন গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম