চাঁদপুর: চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশের সুখ্যাতি দেশ ও বিশ্বজুড়ে। যে কারণে মৌসুমের এই সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে আসছেন। কিন্তু চড়া দাম হওয়ায় ইলিশ না কিনেই ফিরে যেতে হচ্ছে অনেকের। ক্রেতার বলছেন-দাম প্রতিকেজিতে আরও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কমানো প্রয়োজন। কারণ ঢাকার চাইতে চাঁদপুর ঘাটে ইলিশের দাম বেশী।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা মিলে বহু বিক্রেতা ও ক্রেতার। এর মধ্যে খুচরা ক্রেতার সংখ্যা শত শত। আড়তগুলোতে খুচরা ইলিশ বিক্রিতে ব্যস্ততা বেশি। সকাল ৯টায় শুরু হয় ইলিশের পাইকারি ও খুচরা বিক্রি। চলে রাত ৯ থেকে ১০টা পর্যন্ত।
চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ঢাকার উত্তরা থেকে আসা ক্রেতা সাগর বলেন, এই প্রথম কয়েকজন মিলে চাঁদপুরে ইলিশ কিনতে আসলাম। ধারণা ছিলো এখানে দাম কম হবে। কিন্তু এখানে ঢাকার চাইতে প্রতিকেজিতে ২০০ থেকে ৩০০টাকা বেশি।
একই সাথে ইলিশ কিনতে আসা রশিদ বলেন, ‘শুনে এসছি চাঁদপুরের ইলিশের দাম কম। কথায় আছে-আমতলায় আমের দাম বেশি। এখানে এসেই সেই চিত্রই দেখলাম। যেই ইলিশ ঢাকায় বিক্রি হয় ১২শ’ টাকা। সেই ইলিশ এখানে ১৪শ’ থেকে শুরু করে ১৬শ’ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছে নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে কম তার জন্য দাম চড়া।
যশোর থেকে আসা ক্রেতা মিরাজ উদ্দিন বলেন, ইলিশ কেনার জন্যই মূলত আসা। তবে দাম কিছুটা কম হলে ভালো হত। এক কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৪শ’ টাকা হলে চলে। কিন্তু এখানে বিক্রি হচ্ছে ১৬শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা। সব সাইজের ইলিশেই প্রতি কেজিতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কমালে সাধারণ ক্রেতারা কিনতে পারবে।
ঘাটের একাধিক খুচরা ইলিশ বিক্রেতা বলেন, এখন ভরা মৌসুম হলে আগের তুলনায় নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে কম। সামনে মা ইলিশ ধরায় আসছে নিষেধাজ্ঞা। পুঁজার জন্য ইলিশের চাহিদা বাড়ছে। ভারতে ইলিশ পাঠানো হবে না বললেও যাচ্ছে। নানাবিধ কারণে ইলিশ বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বেশ কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বলে জানাগেল, তারা চাঁদপুরের ইলিশ দেখে সন্তুষ্ট। কিন্তু দামের বিষয়ে আপত্তি। প্রায় সবগুরো আড়ৎ ও খুচরা দোকানে একই দামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। মনে হচ্ছে তাদের মধ্যে একটি সিন্ডিকেট আছে। যে কারণে ইলিশের দাম কমছে না।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি আব্দুল বারী জমাদার মানিক বলেন, ইলিশ পর্যায়ক্রমে প্রতিবছর উৎপাদন কমছে। সে হিসেবে চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু তুলনামূলক দাম বাড়েনি। ক্রয়ের আলোকে আমাদের বিক্রি করতে হয়। তমে মৌসুমের শেষ সময়েও যদি সরবরাহ বাড়ে এবং নদীতে ইলিশ ধরা পড়ে তাহলে দাম কিছুটা হলেও কমবে। কিন্তু ক্রেতাদের অভিযোগে ইলিশের দাম কমানো যায় না।
ফম/এমএমএ/