চাঁদপুর: আসন্ন পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরনে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর, জেলা ক্যাব ও বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির যৌথ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের ফয়সাল শফিং কমপ্লেক্স এর তৃতীয় তলায় বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি জেলা শাখার কার্যালয়ে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নূর হোসেন।
এ সময় তিনি বলেন, মানুষের খাদের চাহিদা বেড়েছে বলে হাইব্রিড খাবারের চাহিদা বেড়েই চলছে। আগে দেশের অনেক কৃষকের বাড়িতে ধানের বীজ থাকতো। কিন্তু বর্তমানে বীজ আমাদের বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। আপনারা প্রতিদিনের প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার তৈরি করবেন তাহলে আর খাবার বাসী হবে না। আপনাদের ওয়ান মিনিটে অনেক সময় গেলে মিষ্টি পাওয়া যায় না। দোকানী বলেন শেষ হয়ে গেছে। কারণ ওয়ান মিনিট প্রতিাদনের চাহিদা অনুযয়ী মিষ্টি বানিয়ে থাকে বলে তা শেষ হয়ে যায়। নিজের সততা রেখে যদি ব্যবসা না করেন তাহলে শুধু আইন ও জরিমানা করে তা রোধ করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, অনলাইনে যারা ব্যবসা করছে তাদের বিষয়ে আমরা কাজ করছি। কারন সকল ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা চলছে তাই আপনাদেরকে সেটা মেনে কাজ করতে হবে। মূল্য তালিকার জন্য গত এক বছরের কোন ব্যবসায়িকে জরিমানা করতে পারি নাই। তা অবশ্যই ভাল একটি বিষয়। কারন আপনারা আইন মানছেন। আমরা জরিমানা করতে চাই না। আপনারা সরকারের আইন না মেনে ব্যবসা করলে জরিমানার কবলে পরতে হবে।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি জেলা শাখার সভাপতি হাজী মোঃ নুরুল আলম লালুর সভাপতিত্বে ও জেলা ক্যাবের দপ্তর সম্পাদক মোঃ বিপ্লব সরকারের পরিচালনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের ফুড সেফটি অফিসার মোঃ আরিফুল হাসান, আরও বক্তব্য রাখেন জেলা ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ মাসুদ আখন্দ, উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অজিত সাহা, চেম্বার অব কর্মাসের প্রতিনিধি ও জেলা ক্যাবের কোষাধ্যক্ষ গোপাল সাহা, জেলা ক্যাবের সহ সভাপতি মোঃ সেলিম, সালাউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন বেপারী ও দপ্তর সম্পাদক মোঃ জাহিদুল হক মিলন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্যাবের সিনিয়র সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা রুহুল আনোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ছানা উল্লাহ খান, সদস্য অভিজিত রায়, বীব মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার, পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর খোদেজা, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক মোঃ মুজিবুর রহমান আখন্দ (মাইনু), কোষাধ্যক্ষ সম্পদ সাহা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ মামুন রহমান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আবু নাছের হোসেন, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মামুন হোসেনসহ আরও অনেকে।
সভায় বক্তারা বলেন, সামনে রমজান আমরা হোটেল মালিকরা ভাল খাবার পরিবেশন করবো। কারন আমরা ব্যবসা করছি কিন্তু এর সাথে সাথে আমরা নিজেরাও ভোক্তাও। যে খাবারটা থেকে যায় তা কি করবো তা নিয়ে প্রশ্ন রাখেন ব্যবসায়িরা। অনলাইনে যারা খাবার বিক্রি করছে তাদের খাবারের মানের বিষয়ে ভোক্তা অধিকার ও ক্যাব কি ব্যবস্থা নিয়েছে। আমাদের হোটেল বয়দের জন্য ট্রেনিং সেন্টার প্রয়োজন। রাষ্ট্র শুধু আইন করলেই হবে না, আইনের প্রয়োগ যেন সুনিশ্চিত করা হয়।
ক্যাবের নেতৃবৃন্দ বক্তব্যে বলেন, হোটেলগুলোতে পরিবেশ যেন সুন্দর থাকে, পরিচ্ছন্ন থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে কোনভাবেই বাসী খাবার ভোক্তাকে দেওয়া যাবে না। ফ্রিজে কোন অবস্থাতেই রান্না করা খাবারে সাথে কাঁচা মাংস রাখা যাবে না। কোন অবস্থাতেই পন্য মজুত করা যাবে না। জরিমানা রোধ করতে ব্যবসায়িদের স্বচ্ছভাবে ব্যবসা করতে হবে। রমজান আসলে অনেক ব্যবসায়ি বেশী লাভের চিন্তা করেন তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। হঠাৎ করে যেন খাবারের দাম বাড়ানো না হয়।
নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, আমাদের দেশে যে কালারগুলো ব্যবসার করা হয় তা সত্যিকারের ফুডগ্রেড কালার নয়। আপনারা কোন অবস্থাতেই খাদ্যে কালার ব্যবহার করবেন না। খাদ্যে জেজালের জন্য আমরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। বাইরের দেশে বেশী সয়খ্যক মানুষ হোটেলে খাবার খায় কিন্তু আমাদের দেশে হোটেলে খাবার কম খান, প্রয়োজন পরলে খায়। আপনারা বেশী লাভের আশায় ক্রেতা হারাচ্ছেন। কোন খাবার বাসী করবেন না, বাসী খাবার কোন অবস্থাতেই বিক্রী করা যাবে না।
ফম/এমএমএ/