মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন তিন লেখক

চাঁদপুর : শিল্প-সাহিত্যের সংগঠন সাহিত্য মঞ্চ, চাঁদপুর প্রবর্তিত ‘মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪’ পাচ্ছেন এই সময়ের পাঠকপ্রিয় তিন লেখক। বাংলা সাহিত্যকর্মে তাদের প্রয়াসকে সম্মান জানিয়ে তিনটি শাখায় এ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন সাহিত্য মঞ্চের সভাপতি কবি ও অনুবাদক মাইনুল ইসলাম মানিক।

পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন-কবি শাহ বুলবুল (কবিতায়), গল্পকার ও গবেষক নাহিদা নাহিদ (কথাসাহিত্যে) এবং প্রাবন্ধিক ও গবেষক ড.শামস্ আলদীন (প্রবন্ধ ও গবেষণায়)।

এ প্রসঙ্গে সাহিত্য মঞ্চের সভাপতি মাইনুল ইসলাম মানিক বলেন, সাহিত্য বিষয়ক কার্যক্রমের পাশাপাশি চাঁদপুরের কৃতি সন্তান, সওগাত সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের নামে সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তন করেছে শিল্প-সাহিত্যের সংগঠন সাহিত্য মঞ্চ। সাহিত্যে বিশেষ প্রয়াসের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২০ সাল থেকে আমরা এ পুরস্কারটি প্রদান করে আসছি।

ইতোমধ্যে প্রখ্যাত লেখক জাহিদ হায়দার, মাসুদুজ্জামান, প্রশান্ত মৃধা, ফারুক হোসেন, সরকার আবদুল মান্নান, নাসিমা আনিস, আহমেদ রিয়াজ, শেখ ফিরোজ আহমদ, মনসুর আজিজ, প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন (মরনোত্তর) এবং সংগঠক হিসেবে কাজী শাহাদাত ও ইলিয়াস ফারুকী এ পুরস্কার লাভ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ তিনটি শাখায় ‘মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার- ২০২৪’ ঘোষণা করা হলো। তিন গুণী লেখক ও সংগঠককে সম্মান জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত ও গৌরববোধ করছি।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশিক বিন রহিম বলেন, দেশের রাজনৈতিক পুষ্টির কারণে আমরা ২০২৩ সালের পুরস্কারটি লেখকদের হাতে তুলে দিতে পারেনি।সাহিত্য মঞ্চের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ শুক্রবার চাঁদপুর সাহিত্য সম্মেলন-২০২৫ অনুষ্ঠিত হবে। চাঁদপুর সাহিত্য সম্মেলনে পুষ্প প্রাপ্ত ২০২৩ এবং ২৪ সালের সম্মানিত লেখকের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা হলেও রাষ্ট্রীয় অস্থিতিশীলতার কারণে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকগণের হাতে তা তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি। ২০২৩ সালের পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকগণ হলেন-কবি মাহমুদ কামাল ও জুনান নাশিত (কবিতায়), কথাসাহিত্যিক রুমা মোদক (কথাসাহিত্যে) এবং প্রাবন্ধিক ও গবেষক সুমনকুমার দাশ (প্রবন্ধ ও গবেষণায়)।

এ বছর পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক নাহিদা নাহিদ একজন গল্পকার ও গবেষক। জন্ম ৫ জুলাই, চাঁদপুরে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ চারটি—অলকার ফুল [২০১৭], যূথচারী আঁধারের গল্প [২০১৮], পুরুষপাঠ [২০১৯] ও বহু বসন্তের দাগ [২০২৩]। তিনি যূথচারী আঁধারের গল্প গ্রন্থটির জন্য কথাসাহিত্য বিভাগে ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০১৮’ এবং পুরুষপাঠ গ্রন্থটির জন্য নবীন সাহিত্যশ্রেণিতে ‘এক্সিম ব্যাংক অন্যদিন হুমায়ূন আমাহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২০’ অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

কবি শাহ বুলবুলের জন্ম ১৯৭৯ সালে চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলায়। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্মে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কবিতার পাশাপাশি সম্পাদনা, সমসাময়িক বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণ, আলোচনা-সমালোচনা, শিক্ষা ও সংস্কৃতির মতো বিষয়গুলোতে তিনি লিখছেন শস্যকামী কৃষকের মতো। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘নির্বাসনে যাবার আগে’ ২০১২ সালে প্রকাশিত হয়। বিপ্লবী ক্ষুদিরামকে নিয়ে ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয় ‘ক্ষুদিরামের কথা’ বইটি। বিপ্লবী আর্নেস্ত চে গুয়েভারাকে নিয়ে ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় ‘মৃত্যুহীন গেরিলা’। সাত্তারটি কবিতা নিয়ে তার সর্বশেষ প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘মৃত্যু ও নির্বাসন’।

প্রাবন্ধিক ও গবেষক ড. শামস্ আলদীনের জন্ম ১৯৮২ সালে মেহেরপুর জেলার মল্লিকপাড়ায়। ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তার রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৫টি।
ফম/এমএমএ/

ফোকাস মোহনা.কম