তুই এসে দেখে যা, সুদর্শনা (কবিতা)

প্রতিকী ছবি।
—যুবক অনার্য
তেত্রিশ বছর এ ভাগাড়ে পড়ে আছি। দ্যাখো এই হাত, এখানে বাস করছে কংকাল দ্যাখো এই পা যেখানে ক্রমশ গজিয়ে উঠেছে শিকড় চুলের মধ্যে জটাজাল, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা বুকে প্রেমের অসুখ  -এভাবে দিন যায় রাত আসে রাত যায়, রাত কি যায় আর দিন কি  ফিরে আসে আর!বাতাসে উড়িয়ে ঘুড়ি আমারও ইচ্ছে ছিলো একদিন আমিও কুড়াবো জোছনার ভ্রুণ ইচ্ছে ছিলো ঝাউবনে লুকিয়ে থেকে তোমাকে ফিরিয়ে দেবো হারানো শৈশব  লুকোচুরি খেলে। ডাংগুলি লাটিমের সেইসব দিনগুলি এঁকে রাখবো তোমার আঙুলের তুলি দিয়ে বুকের গহীনে খুব। যখন একটু  একটু করে অথচ আচমকা একদিন চলে আসবে বয়ঃ সন্ধি বেলা, চোখের দেখাগুলি মনের বর্ণগুলি বদলে গিয়ে সন্ধান করবে নতুন কোনো  অনুভূতিমালা। অফুরন্ত বৃষ্টি আর বৈশাখী ঝড়ের মতো কোনো এক নারীমুর্তি দখল নেবে বুকের মধ্যে জেগে উঠা  সমস্ত চর। পাগলা লালুর দোকানে সিগ্রেটে  উড়িয়ে ধোঁয়া অপেক্ষায় থাকবো তার।রিকশার হুড উঠিয়ে নামিয়ে চড়ে বেড়াবো সারাটা শহর। তারপর বিকেল এলে সেই তো পুরনো আমাদের ছবির হাট
।” তোমার বুকে বসত করে কয়জনা মন জানো না”র প্রিয় জাহিদ ভাই, প্রিয় কবি সমর চক্রবর্তী , The  Legend Unfinished এর স্রষ্টা কবি রাসেল আশেকী, বিকেল পার করে সন্ধা, সিগ্রেট তারপর ক্যানাবিজ তারপর সন্ধার আঁধার মিলিয়ে গিয়ে আসবে রাত্রির অন্ধকার। সারা রাত ঘুরে ঘুরে দেখবো রাতের ঢাকা যেনো বা হুমায়ুন আহমেদের ” চাঁদের আলোয় কয়েকজন যুবক”।দেখবো কমলাপুর রেল স্টেশন ঢাকা ফু্টবল স্টেডিয়ামে শুয়ে আছে অর্ধ উলংগ নরনারীগণ আর ক্ষুধার্ত শিশুদের দল।।স্বাধীনতা-উত্তর সেইতো পুরনো ঢাকা,হতে কি পেরেছে খুব একটা অন্য এক ঢাকা!জানি মাথার উপরে উড়ছে ফ্লাইওভার। তবুতো অর্ধ উলংগ নরনারী  তবুতো ক্ষুধার্ত শিশু।মাটি বন্টন পানি বন্টন  এমনকি যোনি বন্টন দেশীয় বর্গি  বিদেশী  বর্গি – দখল দখল কেবলি দখল,ঈশ্বর হতে চাওয়ার অসুস্থ্য বাসনা।এসব দেখবো আর কতোকাল! তেত্রিশ বছর এ ভাগাড়ে পড়ে আছি। ইচ্ছের বিরুদ্ধে অনিচ্ছের লড়াই।” হাট্টিমাটিম  টিম রাজা রাণী ভোটকেন্দ্রে পাড়ে ডিম।” তেত্রিশ বছর এইভাবে কেবলি রাতচরা পাখি হয়ে অন্ধকার আকাশে অন্ধকার খুঁড়ে খুঁড়ে কেবলি বেরিয়ে আসে অন্ধকার!
আচ্ছা, সুদর্শনা,বাংলার আকাশ কি কোনোদিন হবে না একটি নীলাকাশ – দূরের অই নীল নীল নীকাকাশ!

ফোকাস মোহনা.কম