ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহিম প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করার ক্ষমতার উৎস কোথায়!

কচুয়া (চাঁদপুর): কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. ইব্রাহিম মিয়া (দুরন্ত) একটি ভুয়া বায়না পত্র তৈরি করে বাসাবাড়িয়ার উত্তম সরকারের সাড়ে ৮ শতক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে নেয়। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত শনিবার দুপুরে চাঁদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (কচুয়া সার্কেল) আবুল কালাম চৌধুরী, কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইব্রাহীম খলিল ও অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) নাজিমউদ্দীন ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করেন।

তদন্ত শেষে ইব্রাহিমের বায়নাপত্রটির সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে না পারায় ইব্রাহিম কর্তৃক জোর পূর্বক দখলকৃত সংখ্যালঘু উত্তম সরকারের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক জমি দখলদার ইব্রাহিম রবিবার সকাল ৮টার মধ্যে নিজ দায়িত্বে অবৈধভাবে দখল করা সম্পত্তির উপরে তার দেওয়া বাঁশের বেড়া সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে নিজেই সম্মাতি প্রকাশ করে। পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়ার পরও ১২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহিম অবৈধভাবে উত্তম সরকারের সম্পত্তি থেকে বাঁশের বেড়া সরিয়ে নেয়নি।

পুলিশ প্রশাসনের সুস্পষ্ট নির্দেশ থাকার পরও কার ক্ষমতার প্রভাব খাঁটিয়ে ইব্রাহীম দখল করা সম্পত্তির জায়গায় বেড়া না সরিয়ে এলাকায় দাবরিয়ে বেড়াচ্ছে। স্থানীয় জনগনের অভিমত তাহলে কি পুলিশ প্রশাসনের চেয়েও ইব্রাহীমের ক্ষমতা বেশি। কার ক্ষমতায় এখনো দখল করা জায়গা থেকে বাঁশের বেড়া সরায়নি। এ ঘটনাটি কচুয়া এখন টক-অব দা টাউন।

এ ব্যাপারে কড়ইয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম সওদাগর বলেন, ইব্রাহীম বেড়া না সরিয়ে আইন অমান্য করেছে । সে দীর্ঘদিন যাবত সাধারন মানুষের সাথে চিটিং করে আসছে। আমি খুব দ্রুত বেড়া সরিয়ে ওই জায়গা দখলমুক্ত করার ব্যবস্থা করছি।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহিম খলিল জানান, আমি সারা দিন দাপ্তরিক কাজে অফিসের বাহিরে ছিলাম , এখনই লোক পাঠিয়ে রাত ৮টার মধ্যে বেড়া সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করছি।

প্রসংগত: উত্তম সরকারের জায়গা ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহীম প্রতারনা বায়না পত্র সৃষ্টি করায় থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে দেশের শীর্ষ স্থানীয় বেশ ক’টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসহ চাঁদপুরের বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ পায়। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর তদন্তকালে উত্তম সরকার তদন্ত কর্মকর্তাদের সামনে উপস্থাপন করেন যে, সম্প্রতি কচুয়া বাজারে গেলে ইব্রাহীম গং ফিল্ম স্টাইলে উঠিয়ে নিয়ে বাজারে অবস্থিত রূপসী হোটেলে একটি কেবিনে নিয়ে যায়। সেখানে ৩টি খালি স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক আমার স্বাক্ষর নেয়। এই স্বাক্ষর নেওয়া অলিখিত স্ট্যাম্প কচুয়া সাব রেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লিখক জহিরুল ইসলামের দ্বারা ভুয়া বায়না পত্র দলিল সৃষ্টি করে। জিজ্ঞাসাবাদে দলিল লেখক জহিরুল ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তাদেরকে জানান, পূর্বে স্বাক্ষর করা ষ্টাম্পে বায়নাপত্র লেখা হয়। এসময় ইব্রাহিম গং ব্যতিত অপর কেউ উপস্থিত ছিলো না।

বায়না পত্রের গ্রহীতা ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহিমের মা ফাতেমা বেগমের কাছে বায়না দলিলের অর্থ জোগান বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।

বায়না দলিলের প্রথম সাক্ষী ইব্রাহিম নিজে, দ্বিতীয় সাক্ষী তার ভাগিনা হাসানাত ও তৃতীয় সাক্ষী তার ভাতিজা রবিউল। তারা উভয় নাবালক।
ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম