চাঁদপুর শহরে কাগজপত্র ছাড়াই চলছে খাঁন ডায়াগনষ্টিক

চিকিৎসকের পরিচিতিতে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য

চাঁদপুর : চাঁদপুরের সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ মো. শাহাদাৎ হোসেন চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন জেলায় বেসরকারি কোন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের কাগজপত্র ত্রুটি নেই। সব কিছুই আপটুডেট। ৫ আগস্টের পরে তার এমন চ্যালেঞ্জ এর আসল রহস্য বেরিয়ে আসছে। একের পর এক হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনিয়ম উঠে আসছে। শহরের প্রাণ কেন্দ্রে চাঁদপুর প্রেসক্লাব সড়কে কোন ধরণের কাগজপত্র ছাড়াই চলছে খাঁন ডায়াগনিস্টক সেন্টার নামে স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিন গিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে পাওয়াগেলে আরও অনেক অজানা তথ্য। অনেকটা পুরনো বোতলে নতুন মদ এর ন্যয়। আল-নাহিয়ান ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে প্রতিষ্ঠানটি কোন ধরণের কাগজপত্র না থাকায় বন্ধ করে দেয় প্রাশসন। ওই প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতি ও লোকজন এবার নতুন নামে খাঁন ডায়াগনস্টিক সেন্টার নাম দিয়ে খুলে বসেছেন।

সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠানের তথ্য জানার জন্য নির্ভরযোগ্য কোন ব্যাক্তিকে পাওয়া যায়নি। অভ্যর্থনা থেকে কথা বলার জন্য পাঠানো হলো চিকিৎসক ডাঃ মো. মাঈনুল ইসলাম এর সাথে। তিনি একটি কক্ষে বসে আছেন কোন রোগী নেই।

এই চিকিৎসকের সাথে পরিচয় হওয়ার পর জিজ্ঞাসা করা হলো আপনার চিকিৎসক পরিচিতিতে যে নম্বর (১৭৬৫২) দেয়া হয়েছে তাতে একজন নারী চিকিৎসক পাওয়া যায়। পরে তিনি নিজ টেবিলের সামনে প্যাডের মধ্যে দেখেন তার পরিচিতি নম্বর ভুল। মূলত ডাঃ মো. মাঈনুল ইসলামের পরিচিতি নম্বর ১৭৫৬২। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক।

এই বিভ্রান্তির বিষয়ে বলতে গিয়ে ডাঃ মো. মাঈনুল ইসলাম বলেন, আপনারা আমার পরিচয় জেনে এসেছেন? আমি চাঁদপুর জেলা বিএনপির উপদেষ্টা, ড্যাবের প্রতিষ্ঠাতা, জিয়া পরিষদের সাবেক সভাপতি। বিগত আওয়ামী লীগের সময় আমি নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছি। চাঁদপুরের সাংবাদিকরা অনেকে আমার পরিচিত।

কিন্তু তার পরিচয় ভুল কেন, এমন প্রতিষ্ঠানে তিনি কেন বসে চিকিৎসা দিচ্ছেন জিজ্ঞাসা করা হলে বলেন, আমার অবসর সময় কাটেনা এ জন্য বসি।

এর আগে এই চিকিৎসক বসতেন আল-নাহিয়ান ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। ওই প্রতিষ্ঠানের কাজগপত্র না থাকায় প্রশাসন বন্ধ করে দেয়। ওই প্রতিষ্ঠানের ভিতরে ছিলো ডাঃ মো. মাঈনুল ইসলামের চেম্বার। ওই ঘটনাটি ৫ আগস্টের পূর্বের।

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আল-নাহিয়ান ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করার পর আমি সিভিল সার্জন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেছি কেন আমার চেম্বার বন্ধ করা হয়েছে? তারা তখন খুলে দেয়নি। ৫ আগস্টের পর আমি সিভিল সার্জনকে গিয়ে বলেছি ‘‘কুত্তার বাচ্চা তুই ১ সপ্তাহের মধ্যে চাঁদপুর ছেড়ে চলে যাবি’। সে চলেগেছে।

খাঁন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাগজপত্র আবেদনপত্র করা আছে কিনা জানার জন্য চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে যাওয়া হয়। ওই কার্যালয়ের অধিকাংশ কর্মচারিই জানালেন কোন আবেদন নেই। তারা নিজেদের ইচ্ছেমত এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। এর আগে এই প্রতিষ্ঠান আল-নাহিয়ান ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে ছিলো। এই প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক মঈনুল ইসলাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে গিয়ে খারাপ আচরণ করেছেন জানান কর্মচারীরা।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (এমও-সিএস) ডা. মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমাদের কাছে খাঁন ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে এখন পর্যন্ত কোন প্রতিষ্ঠান আবেদন করেনি।

ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম