
চাঁদপুর : গত অর্থ বছরে চাঁদপুর জেলার ৯১টি ইটভাটার মধ্যে ৪১টি অবৈধ ইটভাটায় প্রশাসন ও যৌথ বাহিনীর সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। ওই সময় অধিকাংশ ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়া হলেও এবছর আবার চালু করা হচ্ছে ওইসব অবৈধ ইটভাটা। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরকে অবৈধ ইটভাটা মালিকদের ফোন করে ভাটা চালু না করার জন্য নির্দেশনা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার একাধিক অবৈধ ইটভাটায় গিয়ে দেখাগেছে চালু করার জন্য প্রস্তুতি চলছে। এসব অবৈধ ইটভাটা গত বছর গুড়িয়ে দেয়ার পর পরই আবার চালু করে ভাটা মালিকরা। এ ধরণের অভিযান নিয়েও সমালোচনা হয় সাধারণের মধ্যে।
সরেজমিন চালুর জন্য প্রস্তুতি নিতে দেখাগেছে সদরের বাগাদী ইউনিয়নের এবিএম, ফরিদগঞ্জ উপজেলার বলিয়ারপুর গ্রামের ডাকাতিয়া নদী সংলগ্ন দুটি ইটভাটা। এর মধ্যে একটি নতুন নামে শুরু হয়েছে। যার কোন অনুমোদন নেই। একই উপজেলার মেসার্স মাহবুব চেয়ারম্যান ইটভাটা ও পাশবর্তী এনকেএস ইটভাটাও চালুর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মেসার্স মাহবুব চেয়ারম্যান ইটভাটা গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাজীপুর মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় ও গাজীপুর আহমাদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা সংলগ্ন। এটিও গত বছর গুড়িয়ে দেয়া হয়। কিন্তু অদৃশ্য ইশারায় এ বছর আবাল চালু হচ্ছে।
ওই এলাকার মেসার্স এনকেএস ইটভাটার পাশে রয়েছে অনেক বসতি। ওই এলাকার শিক্ষার্থী রায়হান বলেন, ইটভাটা চালু হলেন বিকট শব্দ পড়া লেখা করতে পারে না। ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে গাছপালাসহ সবকিছুই বিপর্যস্ত হচ্ছে।
একই এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, ইটভাটা চালু হলে তারা রাতে ঘুমাতে পারেন না। বিকট শব্দে এবং ধুলাবালুর কারণে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়ে।
গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মালেক বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের পাশেই মেসার্স মাহবুব চেয়ারম্যান ইটভাটা। এটি বন্ধ করে দেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে বহুবার আবেদন করা হয়েছে। মাঝখানে কয়েক বছর বন্ধ থাকলেও এখন আবার চলমান। ইটভাটার কারণে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে। আর ক্ষতি হওয়াটা স্বাভাবিক। শুধুমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় নয়, এখানে একটি শিক্ষা কমপ্লেক্স উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা রয়েছে। সব শিক্ষার্থীর জন্য এই ইটভাটা ক্ষতি কারক।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বসতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে থাকা ইটভাটাগুলো জনস্বার্থ বিবেচনা করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত বছর যেসব অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনায় করা হয়েছে, ওইসব ইটভাটাগুলোর এবার নতুন করে তালিকা করা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে বুঝা যাবে সংখ্যা বাড়ে না কমে। এরপর আইনি প্রদক্ষেপ নেয়া হবে।
ফম/এমএমএ/

