কচুয়া (চাঁদপুর): চাঁদপুরের কচুয়ায় সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা রাস্তাকে ব্যবহার করা হচ্ছে পুকুরের পাড় হিসাবে । রাস্তাগুলো সংস্কারের বছর না যেতেই রাস্তা ধ্বসে পড়ছে পুকুরের পানিতে। উপজেলার গ্রামীণ জনপদের পাকা রাস্তাগুলো এভাবেই একের পর এক পুকুরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার ১৫০টি রাস্তার প্রায় ২ শতাধিক স্থান রাস্তা পুকুরে পড়ে মানুষ চলাচলের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা রয়েছে। সংশ্নিষ্টদের অবহেলা ও নজরদারির অভাবে প্রতি বছর এসব রাস্তার ভাঙন রোধে সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা পাথৈর ইউনিয়নের বারৈয়ারা বাজার থেকে মধুপুর, বিতারা ইউনিয়নের উভয়পাড়া থেকে নাহাড়া মার্কেট,পালাখাল মডেল ইউনিয়নের দহুলিয়া থেকে এনায়েতপুর, কাদলা ইউনিয়নের মনপুরা বাতাবাড়িয়া থেকে বাচাইয়া,দেবিপুর থেকে কাদলাসহ আঞ্চলিক সড়কের একাধিক স্থানগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে পরিবহন ও পথচারীদের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খনন, রাস্তাকে পুকুড়ের পাড় হিসেবে ব্যবহার করে মাছ চাষ করায় রাস্তাগুলো ভেঙ্গে পড়ছে। একসময় ভাঙতে ভাঙতে পুরো রাস্তা বিলীন হয়ে যায় পুকুরে। এতে পথচারীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। বছরের পর বছর এসব ভাঙা রাস্তাগুলো আর মেরামত হয় না। রাস্তার ধারে পুকুর খনন করলেও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
এদিকে গ্রামীণ রাস্তার পাশে পুকুর খননে সতর্ক করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্রে বলা হয়েছে, রাস্তার ধার ঘেঁষে পুকুর বা খাল বা কূপ অথবা সেচ নালা তৈরি করলে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে নিজ খরচে সুরক্ষা ঢাল নির্মাণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো অসুবিধার সৃষ্টি হলে কর্তৃপক্ষ বিল্ডিং কন্সট্রাকশন আইনের ৩ নং ধারা অনুসারে আইনের ৩ ধারার (৩) উপধারা অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে তা অপসারণ, খনন বা পুনঃখনন, বন্ধ বা ভরাট করার আদেশ দিতে পারেন।এছাড়াও দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা ৪৩১ অনুযায়ী সরকারি রাস্তার ক্ষতিসাধন ফৌজদারি দণ্ডনীয় অপরাধ। এই আইনে ৫ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল আলীম লিটন বলেন, আমরা সরকারি টাকায় রাস্তাগুলো তৈরি করি। অথচ সেই রাস্তা কিছুদিন না যেতেই পুকুরে ধসে পড়ে। পুকুর মালিকদের সচেতনতা প্রয়োজন। ব্যক্তিগত পুকুরের জন্য সরকারি সম্পদ নষ্ট করা আইনগত অপরাধ।
ফম/ইসমাইল/এমএমএ/