চাঁদপুর: চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেছেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানটি খুব কষ্ট এবং ঝুঁকিও রয়েছে। তাই আমরা সবাই মিলে যদি এই অভিযানে সহযোগিতা করি তাহলে মা ইলিশকে ডিম ছাড়ার জন্য একটা সুন্দর পরিবেশ দিতে পারবো। আর এই কাজটি যদি সফল করতে পারি তাহলে ইনশাআল্লাহ আগামীতে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি।
রোববার (২ অক্টোবর) সকালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন বিষয়ক জেলা ট্রাস্কফোর্স কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, বরিশাল, ভোলা, লক্ষীপুর, শরিয়তপুর, মাদারীপুর জেলার প্রশাসনের সাথে সমন্বয় সভা করে যৌথ অভিযানের আয়োজন করতে হবে। অস্থায়ী বাজার উচ্ছেদ করে দিতে হবে। লবন মিল, বরফ কল বন্ধ বা এদের দিকে নজরদারি বাড়াতে হবে। আমরা সবাই মিলে মাত্র ২২ দিন যদি একটু সচেতন থাকি তাহলে আমাদের চাঁদপুরের যে ইলিশ নিয়ে গৌরব সেটি আবার ফিরে আসবে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আমরা যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছি অভিযান হবে, তাহলে সেটি শক্ত ভাবে হবে। আমরা এই অভিযানটি সবাই মিলে, সকলের সহযোগিতা নিয়ে সুষ্ঠভাবে সফল করতে চাই।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের (এসপি) কামরুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল, জেলা মৎস কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান ও প্রেসক্লাব সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেন।
অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত বক্তব্য প্রদান করেন, চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াস, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী, ৪নং হাইমচর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী মাস্টার, হাইমচর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রশিদ, আওয়ামী মৎসজীবী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক দেওয়ান, মৎস্যবনিক সমিতির মানিক দেওয়ান, কান্ট্রিফিশিং বোর্ড মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক তসলিম বেপারী।
উম্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত প্রচার প্রচারণা বিষয়ে সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ স্থানীয় পত্রিকায় সচেতনতা মূলক বিজ্ঞপ্তি প্রচার, সাথে মাইকিং, ব্যানার, ফেস্টুন, পোষ্টার, লিফলেটের মাধ্যমে প্রচার করা দরকার। পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া, ধনাগোদাসহ সকল নদ-নদীতে ইলিশ সহ সকল ধরনের মৎস্য আহরণ, পরিবহন, মজুূদ, ক্রয়-বিক্রয়, বাজারজাত ও বিনিময় বন্ধ করতে হবে। বরফ কল বন্ধ রাখা, নদীতে ড্রেজিং বন্ধ রাখা।
তারা বলেন, জেলেদের মাঝে ভিজিএফ বরাদ্দ দ্রুত সময়ে বিতরণ করা। সড়ক পথে চেকপোস্ট তথা বাস, ট্রাক, লন্ঞ্চ, স্টিমার ও নৌযানে চেক করা সহ টহল জোরদার করা। যাত্রীবাহী ট্রলার নৌযান ব্যতিত ব্যাক্তিমালিকানাধীন স্পিডবোট নিষিদ্ধ কালীন সময়ে নদীতে নামতে পারবেনা। মৌসুমী অসাধু জেলেদের গতিবিধি নজরদারিতে রাখতে হবে। অভিযান শুরুর আগেই নিষিদ্ধ কালীন সময়ের জন্য নৌকার ইঞ্জিন খুলে নিজের হেফাজতে রাখা সহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
ফম/এস.পলাশ/এমএমএ/