মতলব উত্তর (চাঁদপুর): চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল বদলী হয়েছেন। তার এ বদলীর খবরে স্বস্তি পেয়েছেন উপজেলার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তিনি সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হয়রানি করতেন বলে অভিযোগ দলীয় নেতৃকর্মীদের। বিভিন্ন মামলার পেচে সাধারণ মানুষও ছাড় পায়নি তার কাছ থেকে। তাই তার বদলীতে আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন বলে অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ প্রধান বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা নিয়ে ওসি শাহজাহান কামাল আমাকে অনেক হয়রানি করেছে। টাকার বিনিময়ে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা সাজিয়ে তাদের অনেক হয়রানি করেছেন তিনি। তার বদলীর খবর শুনে আমার অনেক ভালো লাগছে। এমন অফিসারদের কারণেই পুলিশে সুনাম নস্ট হয়।
দশানী গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল সরকার বলেন, আমাদের আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসে আগুন দিয়েছে এক দল সন্ত্রাসী বাহিনী। আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে গেলে আমাদের মামলা না নিয়ে উল্টো আমাকে আটক করে থানায় নিয়ে হয়রানি করেছেন ওসি শাহজাহান কামাল। যা আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য লজ্জাজনক ঘটনা। এছাড়াও কলাকান্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অনেক দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে হয়রানি করেছেন তিনি। আমি চাই মতলব উত্তর থানায় একজন জনবান্ধব ওসি আসুক। যাতে করে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সুনাম থাকে এবং সাধারণ মানুষ হয়রানি থেকে মুক্তি পায়।
কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম শ্যামল বলেন, ওসি শাহজাহান কামাল একজন লোভী অফিসার। তিনি খামাখা নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতেন। আমি নিজেও তার দ্বারা হয়রানি স্বীকার হয়েছি। একটি ঘটনায় মামলা করতে গিয়েছি তিনি মামলা নেননি, উল্টা আমাকেই হয়রানি করেছেন। তার বদলীর খবর শুনে আমি অনেক খুশি হয়েছি।
কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক এসএম মনির বলেন, যে কেউ দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলেই তিনি মামলা নিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করেছেন, আটক করেছেন। কিন্তু সঠিক ঘটনায় হামলার শিকার হয়েও মামলা করতে গেলে তিনি মামলা নেননি। বরং আমাদেরকে পুলিশ দিয়ে হয়ারানি করেছেন। যেমন কর্ম তেমন ফল, তার বদলী হয়েছে এটা শুনে আমার কাছে স্বস্তি লাগছে।
এছাড়াও গত ইউপি নির্বাচনে হেরে যাওয়া নৌকা মনোনীত কয়েকজন প্রার্থী জানান, ওসি মুহাম্মদ শাহজাহান কামালের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে আমরা নির্বাচনে জয়ী হতে পারিনি। নৌকা সমর্থক ও নৌকা প্রতীকের অনেক কর্মীকে নির্বাচন ঘিরে মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। কলাকান্দা ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী গোলাম কাদের মোল্লা বলেন, ওসি শাহাজান কামাল স্বতন্ত্র প্রার্থী সোবহান সরকার শুভার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্বাচনের আগ মুহূর্তে নির্বাচনী এলাকায় প্রবেশ করতে দেননি। মুলত এটাই ছিল আমার হেরে যাওয়ার মূল কারণ। থানার ওসির বদলিতে আমি ব্যক্তিগতভাবে স্বস্তি প্রকাশ করছি।
এ ব্যাপারে অনেক সাধারণ মানুষও মতামত ব্যক্ত করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, ওসি শাহজাহান কামাল যেকোনো ঘটনায় দুপক্ষে সাথেই ব্যালেন্স করতেন। ন্যায় অন্যায় বুজতে চাইতেন না। পছন্দ ধরপাকর করতেন এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতেন।
তবে এব্যাপারে ওসি মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল বলেন, আমি যতদিন দায়িত্বে ছিলাম কাউকে অযথা হয়রানি করি নাই। যে ই এসেছেন তাকেই আইনি সেবা দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে যারা বলেছেন এসব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মানুষকে সেবা দিতে আমি সবসময়ই তৎপর ছিলাম।
ফম/এমএমএ/