শিল্পীর হাতে গড়া নান্দনিক পাহাড়ি শহর মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম ফ্রিডম হিল

শাহরাস্তি (চাঁদপুর) : মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম ফ্রিডম হিল। দেখে মনে হয় স্যাটেলাইট বা ড্রোন ক্যামেরায় ধারণ করা জীবন্ত ছবি। সেখানে গাছগাছালির সবুজ-শ্যামলিমা, ঝর্ণার গান, পাখির কলতান কিংবা উপত্যকায় বিচিত্র প্রাণীদের ঘোরাফেরা সবই আছে। যেখানে মিলন হয়েছে প্রকৃতি আর সৌন্দর্যের। এটা প্রকৃতির মনোরম কোনো পাহাড়ে সুপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা শহর নয়, শিল্পীর মনন ও কর্মস্পর্শে রুপসী হয়ে ওঠা শিল্পে ফুটে উঠেছে পাহাড়ের অবারিত রুপের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য।
চাঁদপুরের শাহরাস্তি পৌরসভার ঘুঘুশাল গ্রামের ভাষ্কর্য শিল্পী সমীরণ দত্ত। গাছের শিকড় বা ফেলনা জিনিসপত্র দিয়ে নান্দনিক শিল্পকর্ম তৈরীর কারিগর যিনি। কলমদানি থেকে শুরু করে ভাষ্কর্য কিংবা বৈচিত্রময় নকশার ফার্নিচার সবই গড়েন পরম মমতা নিয়ে।

২০১৮ সালের শেষের দিকে অর্ধ সহস্রাধিক শিল্পকর্ম নিয়ে নিজ গ্রামে ৪৭ শতক ভাড়া জমিতে গড়ে তুলছেন আর্ট পার্ক ‘মনবাগান’। যেখানে প্রকৃতি মাঝে চালতা পাতার কারুকাজ, ফুলের সৌন্দর্য আর পাখির কলতানে ফুটে উঠেছে এক নৈসর্গিক আবহের। ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী আর্ট গ্যালারি, নৌকামঞ্চ ও স্তূপীকৃত শিকড়ের সংগ্রহশালার মাঝেই গড়ে তুলেছেন মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম ফ্রিডম হিল। প্রায় ৫০ বর্গফুট জায়গায় মাটি, সিমেন্ট, কাঠ ও প্লাস্টিকের বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে গড়ে তুলেছেন দৃষ্টিনন্দন এ শিল্পকর্ম। যেখানে পাহাড় কেন্দ্রিক গড়ে উঠা শহর থেকে বের হওয়া রাস্তার গ্রন্থি চলে গেছে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। জনপদ পেরিয়ে গহীন অরণ্যে। সেখানে রয়েছে হিংস্র জন্তু, রাস্তায় ছুটে চলা গাড়ি, বহুতল ভবন, পাহাড়ি বসতবাড়িসহ নান্দনিক সবুজের সমারোহ।

৭১ এ দেশ মাতৃকার মুক্তির লড়াইয়ে চাঁদপুর-৫ (শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম মহান মুক্তিযুদ্ধের ১ নং সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেছেন এমনই পাহাড়ি জনপদে, এজন্য শিল্পী এ শিল্পকর্মের নাম দিয়েছেন মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম ফ্রিডম হিল।

মনবাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী হাজীগঞ্জ মডেল কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হোসাইন রবিন জানান, আমরা জানতাম ভাষ্কর সমীরণ দত্ত কাঠ ও শিকড়-বাকড় নিয়ে কাজ করেন। মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম ফ্রিডম হিল শিল্পী মনের এক অনন্য সৃষ্টি। এটি শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করবে।

শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সূচীপাড়া ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আবুল কালাম জানান, মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম ফ্রিডম হিল একটি অসাধারন শিল্পকর্ম। ইতোমধ্যে সমীরণ দত্তের শিল্পকর্ম বেশ সাড়া যুগিয়েছে। তিনি ফেলনা বস্তুকে শিল্পের রূপদান করেছেন।

ভাষ্কর্য শিল্পী সমীরণ দত্ত জানান, যারা জীবনবাজি রেখে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছেন তাঁদের কাছে আমাদের অনেক ঋণ। একজন মহান বীরের নামে নিজ হাতে গড়া শিল্পকর্মের নামকরণ করতে পেরে আমি গর্ব অনুভব করছি। বিজয়ের মাসেই আনুষ্ঠানিক ভাবে এই শিল্পকর্মটি উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

ফম/এমএমএ/

ফয়েজ আহমেদ | ফোকাস মোহনা.কম