সাংবাদিকরা সঠিক তথ্য জাতির সামনে উপস্থাপন করবে এটাই প্রত্যাশা

পত্রিকার সম্পাদকদের সাথে চাঁদপুর জেলা জামায়াতের মতবিনিময়কালে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা বিল্লাল হোসেন মিয়াজী

সভাপতির বক্তব্য দেন চাঁদপুর জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মো. বিল্লাল হোসেন মিয়াজী। ছবি: ফোকাস মোহনা.কম।

চাঁদপুর : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চাঁদপুর জেলা আমির মাওলানা মো. বিল্লাল হোসেন মিয়াজী বলেছেন, সাংবাদিকরা সাদাকে সাদা বলবে এবং সঠিক তথ্য তাদের লেখনির মাধ্যমে জাতির কাছে উপস্থাপন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

বুধবার (১২ নভেম্বর) রাতে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী চাঁদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকদের সাথে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে এই সমাজের জন্য লিখবে এটি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সব সময় গুরুত্ব দিয়ে দেখে। কারণ আপনাদের লিখনির মাধ্যমের সমাজের আসল চিত্র উঠে আসবে। আমি নিজেও যদি ভুল করি কিংবা অপরাধে জড়াই, আমার বিরুদ্ধেও লিখবেন। আপনাদের লেখা বন্ধ থাকলে আমাদের সংশোধন হওয়ার সুযোগ থাকবে না।

এই নেতা বলেন, ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা নিজ এলাকায় কাজ করে আসছে। পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে তখন সামনে আসার সুযোগ হয়নি। তবে বিগত এক বছরের অধিক সময় জামায়াতের নেতাকর্মীরা সকলের সাথে মিলিমিশে কাজ করছে। এতে করে আমাদেরকে কার্যক্রম সম্পর্ক সকলের স্পষ্ট ধারণা রয়েছে।

সামগ্রিক রাজনৈতিক সম্পর্কে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী যে ৮ দলের সাথে জোট করেছে, সেসব জোটের জন্য লিয়াঁজো কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে সব ধরণের ছাড় দিতে প্রস্তুত। জামায়াতে ইসলামী কিংবা ছাত্র শিবিরের মধ্যে কোন গ্রুপিং নেই। সংগঠনের এক ইশারায় সব কিছু মেনে নিবে। জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের যে দাবী সেটিও যৌক্তিক। যদি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন এটি হতে পারে, তাহলে আগে কেন হতে পারবে না। এমন প্রশ্ন রাখেন বিএনপির প্রতি।

সভার সঞ্চালনায় ছিলেন চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান মিয়া।

তিনি বলেন, আমি নিজেও একটি পত্রিকার সম্পাদক ও একজন সংবাদ কর্মী। ২০১৪ সালে আমি সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আপনাদের সার্বিক সহযোগিতায় ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। এবারের নির্বাচনের প্রেক্ষাপটও ভিন্ন। আশাকরি সহকর্মী হিসেবে আপনারা আমার পাশে থেকে এবারও সহযোগিতা করবেন।

তিনি আরো বলেন, আমি নির্বাচিত হলে এই আসনে যেসব উন্নয়ন কাজ অসমাপ্ত রয়েছে সেগুলো সম্পন্ন করতে গুরুত্ব দিব। এছাড়াও যে তরুন সমাজের কারণে আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি তাদের উন্নয়য়ন এবং কর্মসংস্থানকে আমি অগ্রাধিকার দিব। চাঁদপুরের বিনোদন কেন্দ্র তৈরী করা, জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আমি কাজ করবো।

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, এখন কোন নির্বাচিত সরকার নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের এই সময় আপনাদের লেখার সুযোগ রয়েছে। সমাজের সকল অসঙ্গতি নিয়ে এখন লিখতে পারেন। এক্ষেত্রে যে কোন সমস্যায় সাংবাদিকদের পাশে থাকবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আইনের শাসন, ন্যায় বিচারসহ সকল সত্য ও ভালো কাজের সাথে আমরা আছি এবং থাকবো।

মতবিনিময়ে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) সোহেল রুশদী, সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক কাজী শাহাদাত, দৈনিক চাঁদপুর প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, দৈনিক মেঘনা বার্তা পত্রিকার সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মিলন, দৈনিক চাঁদপুর দর্পণ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শরীফ চৌধুরী, প্রভাতী কাগজ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আব্দুল আওয়াল রুবেল, দৈনিক চাঁদপুর সংবাদ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক আব্দুর রহমান, দৈনিক চাঁদপুর প্রবাহের সিনিয়র বার্তা সম্পাদক আল-ইমরান শোভন, সাপ্তাহিক চাঁদপুর সকাল পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন লিটন।

দৈনিক প্রিয় চাঁদপুর পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক বোরহান উদ্দিন ডালিম, দৈনিক সুদীপ্ত চাঁদপুর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এম.আর. ইসলাম বাবু, দৈনিক চাঁদপুর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কেএম মাসুদ, দৈনিক আদি বাংলা পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইমরান হোসেন রাজন, দৈনিক চাঁদপুর সময় পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন উকিল সহ স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারী ও শহর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট মো. শাহাজান খান, সদর উপজেলা আমির মাওলানা আফসার উদ্দিন মিয়াজী, শহর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. সবুজ খান, শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. ইব্রাহীম খলিলসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ রাখতে প্রশাসন, রাজনৈতিক দল এবং গণমাধ্যম সব পক্ষেরই দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন। তারা আশা প্রকাশ করেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটাবে এমন একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন। এক্ষেত্রে নির্বাচন যত নিকটতবর্তী হবে পরিস্থিতি ততটা চ্যালেঞ্জিং হবে। ওই সময় গণাম্যধমে যাতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে এমনটিই তারা প্রত্যাশা করেন।

ফম/এমএমএ/

মো. মাইনুল ইসলাম | ফোকাস মোহনা.কম