সাংবাদিকতা পেশা আমার পথ চলার অনুপ্রেরণা

সাংবাদিকতায় আজ আমার ১০ হাজার কর্মদিবস পূর্ণ হতে চলছে। এই দীর্ঘ পথ চলায় অনেক চড়াই উৎরাই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে। ১৯৯৮ সালের ২৮ জুন জেলা সদর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক চাঁদপুর সংবাদ পত্রিকার মাধ্যমেই গণমাধ্যমে আমার হাতেখড়ি। ওই পত্রিকার সম্পাদকের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা রইল। মতলব উত্তর উপজেলার সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক ইনকিলাব এর প্রতিনিধি মাহবুব আলম লাভলু ভাই এর হাত ধরে এ মহান পেশায় যুক্ত হই। শুরুতে লাভলু ভাই এর আন্তরিক সহযোগিতা কোন দিন ভুলতে পারবো না। আমাকে উৎসাহিত করতে অনেক সময় বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেন। আমাকে নানা উপদেশ ও পরামর্শ দিতেন। সাংবাদিকতার শুরুতে লাভলু ভাই ছাড়াও মফিজুর রহমান খান বাবু ভাই, কামরুজ্জামান হারুন ভাই, রাকিবুল ইসলাম সোহাগ ভাই, প্রসেনজিৎ চন্দ্র বিমল ভাই, হুমায়ুন কবির ভাই ও শামসুজ্জামান ডলার ভাই এর সহযোগিতার কথা সবসময় মনে পড়ে।

আমি যখন সাংবাদিকতা শুরু করি, তখন হাতেগোনা কয়েকজন সাংবাদিক ছিলেন। তাদের মধ্যে ওপরে উল্লিখিত সহকর্মী ছাড়া বন্ধু সহিদুল ইসলাম খোকন ও সাইদুর রহমান শিবলু, লুৎফর বারী বারেক, আমার আপন বড় ভাই নাসির উদ্দিন, নাসির উদ্দিন নদী, মিলন মাহমুদ, জয়নাল আবেদীন খান প্রমুখ ব্যক্তিগন গণমাধ্যমে কাজ করতেন। পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে অনেকেই সাংবাদিকতায় সম্পৃক্ত হয়ে মতলব উত্তরে সাংবাদিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছেন।

সাপ্তাহিক চাঁদপুর সংবাদ পত্রিকার মাধ্যমে শুরুটা হলেও পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় দৈনিক চাঁদপুর প্রবাহ, চাঁদপুর দর্পণ, চাঁদপুর খবর, ইলশেপাড় ও শপথে কাজ করি। এছাড়া জাতীয় দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, দিনকাল, দেশ জনতা, দিনের শেষে, স্বদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় কর্মরত ছিলাম। বর্তমানে আমি স্থানীয় দৈনিক প্রিয় চাঁদপুর পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছি। পাশাপাশি মতলব উত্তর প্রেসক্লাবের বর্তমান সভাপতি।

দীর্ঘ পথ চলায় সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে লুকিয়ে থাকা অনিয়ম দুর্নীতি সহ নানা অপরাধ সম্পর্কে দেশ, জাতি ও প্রশাসনের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমরা যখন গণমাধ্যমে কাজ শুরু করি তখন এখনকার মতো মোবাইলে বা কপি লেখা দিয়ে সংবাদ করা সম্ভব হতো না। নিজে অন্যের লেখা সংবাদ কপি করলেও নিজ হাতে লিখে পত্রিকায় পাঠাতে হতো। মতলব উত্তর তথা চাঁদপুর জেলার জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন করেছি। অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা ও লিখতে গিয়ে বিগত সরকারের আমলে সাতটি মিথ্যা মামলা, বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের শিকার হতে হয়েছে।

সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো এখন আর সাংবাদিককতায় পরিবেশ না থাকলেও সাংবাদিকতা ছেড়ে দেইনি। এখন অধিকাংশ সময় ব্যয় করতে হয় পত্রিকার সম্পাদনার কাজে। জীবনের প্রথম পেশা সাংবাদিকতাকে কোন দিনই বিদায় জানানো সম্ভব নয়। গণমাধ্যমে দীর্ঘ এ পথচলায় সমাজ, রাষ্ট্র বা সর্বস্তরের মানুষের কতটুকু উপকার করতে পেরেছি তা আমার জানা নেই। তবে নিজের সাধ্যানুযায়ি চেষ্টা করেছি এবং আমৃত্যু চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

এখনো সামান্য সময় পেলে লিখতে বসি, চোখের সামনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখি। প্রকাশিত হয় বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে। আমার সাংবাদিকতার দীর্ঘ পথচলায় যে বা যারা বিভিন্নভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন, আমি সকলের প্রতি ঋণী। সকলের আন্তরিক সহযোগিতাই আমার আগামী দিনের পথ চলার প্রত্যয়।

বোরহান উদ্দিন ডালিম
প্রকাশক ও সম্পাদক
দৈনিক প্রিয় চাঁদপুর।

ফোকাস মোহনা.কম