মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সুনসান নীরবতা, সংরক্ষিত ইলিশ বিক্রি হবে গোপনে

চাঁদপুর : বছরের এই সময়ে ইলিশ সাগর থেকে ডিম ছাড়ার জন্য নদীতে আসে। ইলিশের প্রধান প্রজনন রক্ষায় ২২ দিন চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসব সব ধরনের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। যার ফলে চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তগুলোতে এখন সুনসান নীরবতা। ব্যবসায়ীরা বলছেন অবিক্রিত ও সংরক্ষিত ইলিশ বিক্রি হবে গোপনে।

শনিবার (৪ অক্টোবর) শহরের বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখাগেছে আড়তগুলোর সামনে কোন লোকসমাগম নেই। শ্রমিকরা আড়তের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন।

আড়তগুলো ঘুরে দেখাগেছে অনেক ব্যবসায়ী তাদের বিগত দিনের হিসাব সংরক্ষণের কাজ করছে। এসব আড়তগুলোতে প্রতিদিন ১শ’ থেকে দেড় শ’ মণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে। নৌ ও সড়ক পথে দক্ষিণাঞ্চল থেকে এসেছে ইলিশ। আড়তে স্তুপ করে হাকডাক দিয়ে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বর্তমান চিত্র ভিন্ন। খুবই নীরব অবস্থান প্রত্যেক আড়তের সামনে। ক্রেতা-বিক্রেতার সরগরম নেই। নেই শ্রমিকদের ব্যস্ততা। কিছু শ্রমিক দেখাগেলে মাছ নামানোর পন্টুনে বসে অবসর সময় কাটাচ্ছে।

মেসার্স দেলু গাজী মৎস্য আড়তের শ্রমিক ইয়াছিন হোসেন হৃদয় বলেন, আমরা বছর জুড়ে ইলিশ বিক্রি করি। ২২ দিন বন্ধ থাকার কারণে বক্সসহ অন্যান্য জিনিসপত্র পরিস্কারের কাজ করছি। এরপর আমাদের অবসর সময় কাটবে।

ঘাটের ইলিশ বিক্রেতা হুমায়ুন কবির বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় আড়তে সব ধরণের মাছ কেনাবেচা বন্ধ। শ্রমিকরা সব তাদের বাড়িতে থাকবে কিংবা অন্য কাজ করবে। আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে সহযোগিতা থাকে। অন্য কোন মাছ বিক্রির সুযোগ নেই। ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ার জন্য সুযোগ করে দিতে হবে। এই বিষয়ে সব মাছ ব্যবসায়ীরা একমত। কারণ ইলিশ ডিম ছাড়তে পারলেই উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। আর এই সুবিধা জেলে-ব্যবসায়ী সকলে পাবে।

ঘাটের মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক মো. আলী আকবর প্রধানিয়া বলেন, শেষদিন শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দিনগত রাত ১২টা পর্যন্ত ইলিশ বিক্রি হয়েছে। এখন যেসব ব্যবসায়ীর ইলিশ অবিক্রিত আছে, ওইসব ইলিশ গোপনে বিক্রি করবে, আর নায় হয় ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী সবে বরাত সরকার বলেন, মা ইলিশের প্রজনন রক্ষায় ২২ দিন আমাদের আড়তগুলো বন্ধ থাকবে। শ্রমিকরা থাকবে ছুটিতে। সিদ্ধান্তের আলোকে সকল বরফ কল বন্ধ। এই সময়ে অন্য কোন মাছও বিক্রি করা যাবে না।

তিনি বলেন, শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দিনগত রাত ১২টা পর্যন্ত আড়তগুলো ইলিশ বিক্রি হয়েছে। তমে দাম আগের মতই ছিলো। শেষ সময় হলেও দাম বাড়েনি। অবিক্রিত ইলিশ থেকে গেলে গোপনে বিক্রি হবে অথবা সংরক্ষণ করে রাখবেন ব্যবসায়ীরা।

এই মৎস্য ব্যবসায়ী নেতা বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়নে আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় সহযোগিতা থাকে। এ বছরও সহযোগিতা করছি।

ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম