ফরিদগঞ্জে ৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্যসহকারীদের কর্মবিরতি

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) : নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতন বৈষম্য নিরসন ও টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানসহ ৬ দফা দাবিতে ষষ্ঠ দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারীরা।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন দাবি বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মবিরতির কারণে উপজেলার বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে মা ও শিশুরা নিয়মিত টিকা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপজেলা শাখার সভাপতি মো. মাসুদ আলম মিজি। উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালেব, সিনিয়র সহসভাপতি শাহ আলম তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্নি আক্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান ও শরীফ খান প্রমুখ।
স্বাস্থ্য সহকারীরা বলেন, ১৯৭৯ সালের ৭ এপ্রিল বাংলাদেশে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) চালু হওয়ার পর থেকে নবজাতক ও শিশুদের ১০টি মারাত্মক সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষায় আমরা তৃণমূল পর্যায়ে টিকা প্রদান করে আসছি। ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের টিটেনাস টিকার (TT) পাঁচ ডোজ প্রদানেও আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এই কাজ সম্পূর্ণ টেকনিক্যাল হলেও আমরা আজও টেকনিক্যাল পদমর্যাদা থেকে বঞ্চিত।
তারা আরও বলেন, আমাদের নিরলস প্রচেষ্টার ফলেই দেশে গুটি বসন্ত, ম্যালেরিয়া, ধনুষ্টঙ্কার, অন্ধত্বসহ বিভিন্ন সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে, পোলিও নির্মূল হয়েছে, বাংলাদেশ হয়েছে পোলিওমুক্ত দেশ। এসব অর্জনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশ আজ রোল মডেল। তবুও আমরা সরকারি কাঠামোতে নানা বৈষম্যের শিকার।”
স্বাস্থ্য সহকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা গৃহপালিত প্রাণীর চিকিৎসা দেন তারা এখন টেকনিক্যাল পদমর্যাদায় ১১তম গ্রেডে বেতন পান, অথচ আমরা মানবশিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রদান করেও সেই মর্যাদা পাইনি।
তাদের অভিযোগ, ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেতন বৈষম্য নিরসনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, ২০১৮ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রীও প্রতিশ্রুতি দেন এবং ২০২০ সালে স্বাস্থ্য সচিব ও মহাপরিচালক লিখিত সমঝোতা পত্রে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু আজও সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হয়নি।
তারা আরও জানান, পূর্বে একাধিকবার আন্দোলনে গেলেও নানা অজুহাতে আমাদের আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। এবার আমরা আর আশ্বাসে বিশ্বাসী নই, বাস্তবায়ন চাই। ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কোনো স্বাস্থ্য সহকারী কর্মবিরতি থেকে ফিরে যাবে না।
ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম