ছেংগারচর প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও উন্নয়নের বাইরে দুই গ্রাম, জনদুর্ভোগ

মতলব উত্তর (চাঁদপুর): প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হল মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর। ১৯৯৮ সালে ছেংগারচর পৌরসভা সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি ডাইয়াখোলা ও ডেঙ্গুরভিটি গ্রামে। তাই ছিটমহলে পরিণত হয়ে গেছে গ্রাম দু’টি।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, পৌরসভার সাথে যোগাযোগের ভালো কোন মাধ্যম নেই। যেকোন কাজে যেতে হলে পায়ে হাটাই একমাত্র ভরসা। পাকা সড়ক তো দূরের কথা, চলাচলের মত ভালো কাঁচা রাস্তাও নেই। একটি মাত্র পথ থাকলেও তাতে গাড়ি চলাচল অসম্ভব আর বর্ষা এলে তা অকার্যকর হয়ে পড়ে। ওই দু’টি গ্রামে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা হিসেবে পৌরসভার পক্ষে আজও পর্যন্ত কোন গভীর নলকূপ দেওয়ার নজির নেই। ফলে ওই গ্রামের বাসিন্দারা মনে করেন তারা ছিট মহলে বসবাস করছেন। আবার কেউ কেউ ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রাম কেটে ইউনিয়নে নিয়ে যাওয়ার ক্ষোভও প্রকাশ করেন।

ওই গ্রামের বাসিন্দা মোঃ শাহজাহান, আঃ ছাত্তার খান, ওছমান খান, মাজহারুল ইসলাম, ছাত্র মোঃ বিজয়, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মোঃ সোহেল রানা, কলেজ ছাত্র রিফাত ও কয়েকজন কৃষক জানান, আমরা নিয়মিত পৌর কর দিয়ে যাচ্ছি কিন্তু আমাদের গ্রামে কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। প্রায় তিন কিলোমিটার পথ হেঁটে পাকা রাস্তায় যেতে হয়। আর বর্ষাকাল আসলে আমাদের পানি বন্দি হয়ে বসে থাকতে হয়। ১০ বছর আগে ছোট একটা কাঁচা রাস্তা হলে তারপর থেকে কোন সংস্কার হয়নি। তাই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা মহা মুশকিলে পড়তে হচ্ছে। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও আমরা কোন চরবাসী অথবা ছিটমহলে বসবাস করছি বলে আমাদের মনে হচ্ছে।

আরো কয়েকজন জানান, সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ দিবে বলে একাধিক বার নাম ঠিকানা নিয়েছে। কিন্তু আর কোন টিউবওয়েল পাইনি। যার ফলে খাবার পানির সংকটে পড়তে হয় আমাদের।

ছেংগারচর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডভুক্ত ডাইয়াখোলা ও ডেঙ্গুরভিটি গ্রামে প্রায় ৬০০ ভোটার ও প্রায় দুই হাজার মানুষের জীবনযাপন। চারটি জামে মসজিদ রয়েছে। একটি মাদ্রাসা আছে বর্তমানে বন্ধ। এছাড়া আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও নেই।
সাবেক কাউন্সিলর রুহুল কুদ্দুস বলেন, ৭নং ওয়ার্ডে ৭ টি গ্রাম রয়েছে। যার ফলে বরাদ্দ ভাগাভাগি করতে গিয়ে ওই দু’টি গ্রামে তেমন কোন উন্নয়ন করা যায় নি। তবে আমার জানামতে কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তার কাজ হবে।

পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ সুফিয়ান খান বলেন, ডাইয়া খোলা ও ডেঙ্গুরভিটি এই দু’টি গ্রামের বাসিন্দাদের উন্নয়নের জন্য দু’টি রাস্তার কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়াও বিশুদ্ধ পানির জন্য ওয়াটার ট্রিটমেন্ট ও লাইন নির্মাণ কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সদ্য যোগদানকৃত পৌর প্রশাসক মোঃ হেদায়েত উল্লাহ জানান, আমি কিছু দিন আগে সরকারের নির্দেশে প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেছি। এরমধ্যেই পৌরসভার উন্নয়ন কাজগুলো করতে শুরু করেছি। পাশাপাশি ডাইয়াখোলা ও ডেঙ্গুরভিটি গ্রামে দুইটা রাস্তা করণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। ২ কোটি ২৮ লক্ষ টাকায় দু’টি রাস্তার কাজ বাস্তবায়ন হবে।

জানা গেছে, গত ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পৌর পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আর কোন নির্বাচন হয়নি। তাই টানা ৭ বছর পর ছেংগারচর পৌরসভার পরিষদ বার্তিল করে প্রজ্ঞাপন জারী করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। পরে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ হেদায়েত উল্লাহ।

ফম/এমএমএ/

আরাফাত আল-আমিন | ফোকাস মোহনা.কম