ঈদ যাত্রা নিরাপদ হউক

প্রতিকী ছবি।
ইমরান শাকির ইমরু।। ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানেই ধনী গরীব ভেদাভেদ ভুলে পরস্পরকে বুকে টেনে নিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়া। আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চারদিকে শুরু হয়েছে খুশি আর আনন্দের বন্যা। ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে ঈদ উৎসব পালনের মহাপ্রস্তুতি, তোড়জোড়। হাটে, মাঠে, ঘাটে ঈদের খুশিই এখন রঙ ছড়াচ্ছে। মার্কেট, বিপণী বিতানে দেদারছে চলছে ঈদের কেনাকাটা। শুধু শহর নয় প্রত্যন্ত গ্রামের হাটবাজার, বিপণী বিতান খোলা থাকছে গভীর রাত পর্যন্ত। সবার একটাই আকাঙ্ক্ষা যেকোনো মূল্যে ঈদ উৎসবকে রঙিন করে তুলতেই হবে।
অনেকেই আবার পরিবার পরিজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য ছুটে চলছে গ্রামের পথে। এই যাত্রা অনেক পরিবারের কাছে আনন্দের হলেও অনেক পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। অনেক সময় পরিবারে ফিরতে হয় লাশ হয়ে। সেসব পরিবারে শুরু হয় শোকের মাতম। এমন দৃশ্য প্রতিটি ঈদেই আমাদের দেখতে হচ্ছে। এমন সংবাদও দেখতে হয়েছে যে, রাতে মায়ের সাথে কথা বলে মায়ের জন্য ঈদের কাপড় কিনে পরদিন সন্তান লাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে! এর চেয়ে কষ্টের আর কি হতে পারে?
প্রতিবছর ঈদকে কেন্দ্র করে সড়কে যেনো মৃত্যুর মিছিল বয়ে যায়। বিবিসির একটি রিপোর্ট অনুযায়ী
পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর ঈদকে কেন্দ্র করে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশে গড়ে ১২৫ জন মারা যায়।
বাংলাদেশের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একজন সাবেক পরিচালক অধ্যাপক শামসুল হক বলছিলেন, ঈদ মৌসুমে দুর্ঘটনার হার বেড়ে যাওয়ার কারণ। ‘পরিবহণ চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলে গাড়ির চাহিদা বাড়ে, পথচারীর সংখ্যা বাড়ে, যাত্রীর সংখ্যা বাড়ে, ছাদের ওপর যাত্রী যায়, আনফিট গাড়ির সংখ্যা বাড়ে, আনফিট ড্রাইভারের সংখ্যাও বাড়ে। এসব কারণে দুর্ঘটনা ঘটার যেসব সম্ভাবনা থেকে যায়, তা থেকেই দেখা যাচ্ছে দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে।”
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশে রেল ও নৌযোগাযোগ অবহেলিত থাকায় এবং মানুষ এখন সড়কপথের ওপর বেশী নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় যানজট ও দুর্ঘটনা সমানহারে বেড়েছে।
তিনি দীর্ঘমেয়াদে এই দুটি খাতকে শক্তিশালী করার পরামর্শ দিচ্ছেন। সেই সাথে স্বল্পমেয়াদে যানবাহনের চালকদের নিয়মিত বিরতিতে বিশ্রাম দেয়া, ছাদে চড়ার প্রবণতা রোধ করা, এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে কিছুটা হলেও সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব।
সর্বোপরি সকল অপ্রত্যাশিত দূর্ঘটনা থেকে বাঁচতে আমাদের জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের সবার চাওয়া যাত্রা হোক নিরাপদ, ঈদ হোক আনন্দের।
লেখক: শিক্ষক ও কলামিস্ট, চাঁদপুর।

ফোকাস মোহনা.কম