৮০০ একর জমিতে মিশ্র ফল চাষে সফল হযরত আলী

শেরপুরে প্রায় ৮০০ একর জমিতে মিশ্র ফল চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন হযরত আলী (৩৭) নামে এক উদ্যমী যুবক। সফল ফলচাষী হযরত আলী এখন তার বাগানে ফল চাষের পাশাপাশি শুরু করেছেন পরীক্ষামূলক মাছ চাষ, কবুতর, মুরগী ও গরু পালন। তার ওইসব বাগান ও প্রকল্পের সফলতা দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এলাকার আরও অনেকেই।

হযরত আলী কৃষি বিশেষজ্ঞদের কাছে পরামর্শ নিয়ে সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের নিজ গ্রামে ২০১৯ সালে ১শ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেন মাল্টা, কমলা, আঙুর, ড্রাগন, লটকন, পেপে, পেয়ারা, লেবু, কুল বড়ই, সৌদি খেজুরসহ ১২টি প্রজাতির ফলের। বাণিজ্যিক চাষে সফল হওয়ার পর এখন তিনি বিদেশী উন্নত জাতের এভোকাডো, ফ্রাই ছবেদা, মালবেরি, ত্বীন ফল, আলুবোখারা, ভিয়েতনামী নারিকেল, কিউই, আনার, থাই সরিষাসহ আরও ২৭১টি জাতের ফলের পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেছেন।

ইতোমধ্যে তিনি শেরপুর সদর উপজেলার রৌহা, ভাতশালা, কামারিয়া ও বলাইয়েরচর ইউনিয়নে প্রায় ৮শ বিঘা জমিতে ১২টি ফল ও চারা উৎপাদন বাগান করেছেন। ১শ বিঘা জমি নিজের থাকলেও বাকী জমি তিনি ২০ বছরের জন্য লিজ নিয়েছেন। তার বাগানের মাল্টাসহ অন্যান্য ফল ফরমালিন মুক্ত থাকায় এবং ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার না করায় এখানে উৎপাদিত ফলের চাহিদা বেশী।

সরেজমিনে গেলে কথা হয় সফল ফলচাষী হযরত আলীর সাথে। তিনি জানান, দেশের মানুষকে বিষমুক্ত তাজা ফল উৎপাদনের চিন্তা থেকেই আমি মা-বাবার দোয়া ফ্রুট গার্ডেন এন্ড এ্যাগ্রো ফার্ম নামে ফলের বাগান শুরু করি। প্রথমে ফল চাষ আশানুরূপ হওয়ায় পরবর্তীতে একটি নার্সারী ও আরও ১১টি ফলের বাগান তৈরি করেছি। আমার যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তার চেয়ে বেশী ফল উৎপাদন ও বিক্রি হচ্ছে। আমার বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫২ হাজার ফলের গাছ রয়েছে। এর মধ্যে ১৯ হাজার মাল্টা গাছ রয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিদিনই অনেকেই এ ফল বাগান দেখার জন্য আসেন দেখেন।

এ ব্যাপারে শেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুবাইয়া ইয়াসমিন জানান, আমাদের ধারণাই ছিলো না শেরপুরের সমতল ভূমিতে মাল্টা চাষ সম্ভব হবে। কৃষক হযরত আলী মাল্টা চাষে সফল হওয়ায় উজ্জল সম্ভাবনা দেখছি আমরা। তার বাগানে মাল্টাসহ অন্যান্য ফল চাষে বিদেশি ফল আমদানী অনেকাংশেই হ্রাস পাবে বলে আশা করছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা হযরত আলীসহ স্থানীয় কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছি। তার মতে, হযরত আলীর বাগানটি অন্যদেরও সফলতায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।

ফম/এমএমএ/

কৃষি ডেস্ক | ফোকাস মোহনা.কম