হারিয়ে যাচ্ছে ফরিদগঞ্জের মৃৎশিল্প

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর): সময়ের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে ফরিদগঞ্জের মৃৎশিল্প। হাজারো সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত মৃৎশিল্পে জড়িত পরিবার গুলো। পূর্ব পুরুষদের পেশা ধরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে অনেকেই।

আইটপাড়া গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মৃৎশিল্পীদের বসবাস গ্রামের এসব মৃৎশিল্পীদের অধিকাংশই পাল সম্প্রদায়ের। পাল সম্প্রদায়ের সব লোকেই এক সময় মৃৎশিল্পের সাথেই জড়িত ছিলো। পরিবারের সকল সদস্যর জীবন জীবিকা নির্বাহ হতো মৃৎ শিল্পের বিভিন্ন পণ্য সামগী বিক্রী করে। বর্তমানে বাজারে মাটির জিনিস পত্রের চাহিদা না থাকায় এর স্থান দখল করে নিয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের পণ্য। সে কারনেই পুরনো এ শিল্পের সাথে জড়িত লোকজনের অনেকেই চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার আইটপাড়া গ্রামের কামার বাড়ীর মালতি রানী (৪৫) এক ছেলে, তিন মেয়ের সংসার । মালতি রানী ও তার স্বামী দুজনেই এ পেশার সাথে জড়িত। দিন দিন এ পেশার কদর কমে যাওয়ায় কোন রকম জীবন সংগ্রামে ঠিকে আছেন। আদি পেশা নিয়েই বেঁচে থাকতে চান মালতি রানী। কিন্তু এ পেশার নানাবিধ সমস্যা আজ ঠিকে থাকা সম্ভব নয় বলে জানান।

ঐ বাড়ীর বিযু (৫৯) ও তার স্ত্রী সদসী রানী পাল সহ পরিবারের সবাই এ পেশার সাথে জড়িত ছিলো। বর্তমানে এটেল মাটির দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং মাটির তৈরি জিনিস পত্রের দাম না থাকায় এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যায়। তাদের ছেলের ও আদি এ ব্যবসার সাথে যুক্ত না হয়ে অন্য পেশায় চলে যায়। ঐ গ্রামের আরেক কামার পল্লীর হরিদ্র পাল (৭০) বাপ দাদার এ পেশা ঠিকিয়ে রাখতে আজ ও সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।

তিনি জানান, আমাদের এক সময় চান্দ্রা ,ফরিদগঞ্জ ,গল্লাক বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে দোকান ছিলো, এখন আর বাজারে কোন দোকান নেই। মাটির জিনিস বিক্রী না হওয়ায় বাড়ীতে অল্প করে কিছু মাটির জিনিস তৈরি করি। ছেলেরা ও অন্য পেশা চলে গিয়েছে বলে জানান।

পাল বংশের অনেকেই জানান, ইচ্ছা থাকা শর্তে ও বাপ দাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশা চলে গিয়েছি। অনেক চেষ্ঠা করেছি বাপ দাদার এই পেশায় ঠিকে থাকতে কিন্তু এ পেশা দিয়ে জীবন সংসারে ঠিকে থাকা সম্ভব নয়। ফরিদগঞ্জের মৃৎশিল্প ঠিকিয়ে রাখতে সরকারি সকল প্রকার সহযোগীতার জন্য এলাকাবাসীর জোরালো দাবী জানান ।

ফম/এমএমএ/

মো. বারাকাত উল্লাহ | ফোকাস মোহনা.কম