হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর): চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে দৃষ্টি প্রতিবন্ধি নূরে আলম পাটওয়ারী নূরু (২২) হত্যার ঘটনায় প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন স্বজন, স্থানীয় ও এলাকাবাসী এবং মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা।
৫ বছরের বেশি সময় পার হলেও হত্যার কারণ উদঘাটন, প্রকৃত আসামি গ্রেফতার ও শাস্তি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তারা মানববন্ধন করেন।
এছাড়াও তদন্তপূর্বক প্রকৃত আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার, উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিতকরণ ও এজাহারভুক্ত আসামিদের মুক্তির দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে স্মারক লিপি প্রদান এবং জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ আদালতের সামনে মানববন্ধন করবেন বলেও জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
গত ২৫ আগস্ট, রোববার বিকালে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মামলা থেকে বাঁচতে এবং অন্যদের ফাঁসাতে নিরিহ লোকজনকে আসামি করা হয়েছে। এতে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন প্রতিবেশীরা। আর প্রকৃত আসামিরা বিচারের মুখোমুখি না হওয়ায় ওই ইউনিয়নে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে বলেও তারা জানান।
বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের এন্নাতলি গ্রামের দক্ষিণ-পূর্ব ঈদগাহ মাঠের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এলাকার সর্বস্তরের জনগণ আয়োজিত উল্লেখিত ব্যানারে ওই এলাকার মহিউদ্দিন দুলাল ও গোলাম কিবরিয়াকে খুনি উল্লেখ করে তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।
প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তারা বলেন, মহিউদ্দিন দুলাল ও গোলাম কিবরিয়া এলাকার নিরিহ লোকজনকে আসামি করেছে এবং আসামি করার ভয় দেখিয়ে বানিজ্য করেছে। আমরা চাই নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার এবং যারা হয়রানি শিকার হয়েছে তাদেরকে মুক্তির ব্যবস্থা করা হোক।
এসময় তারা আরও বলেন, গোলাম কিবরীয়া নিজে ও তার পরিবারকে বাঁচাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার নুরুর ভাই প্রতিবন্ধি খোরশেদ আলম পাটওয়ারীর সাথে তার শিক্ষিত বোনকে বিয়ে (বিবাহ) দেয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার নূরুর চাচা আবুল খায়ের পাটওয়ারী, হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মো. ইউসুফ পাটওয়ারী, এলাকাবাসীর পক্ষে হুমায়ুন কবির, ইয়াছিন পাটওয়ারী ও নূরে আলম ফরাজী। মানববন্ধনে ওই এলাকার প্রায় শতাধিক লোক অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে অভিযুক্ত গোলাম কিবরীয়া ওই সময়ে বলেন, নুরু হত্যা মামলার আসামিরা যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানে আমি ও আমার বাবার নাম ছিল না। এখন প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে আমাদেরকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন একটি পক্ষ।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৮ মে সকালে উপজেলার বড়কুল-এন্নাতলী মাঠের একটি হালট থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধি নূরে আলম পাটওয়ারী নুরুর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে এন্নাতলী গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ীর আবুল বাসার ছোট ছেলে। এই ঘটনায় নূরুর মা হোসনে আরা বেগম বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজহারে আসামি হিসেবে কাউছার হামিদ মিয়াজী, হুমায়ুন বেপারী, মো. ইউসুফ পাটওয়ারী, মো. আব্দুর রহিম ও আক্তার ফরাজীসহ আরো অনেকে উল্লেখ করা হয়। ওই সময়ে নামীয় আসামিদের গ্রেফতার এবং পরে তারা জামিনে বের হয়ে আসেন।
এদিকে এজাহারে নামীয় আসামিরা দাবি করেন, তারা নূরু হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত নয়। প্রকৃত আসামিরা বানিজ্য করতে এবং মামলা থেকে বাঁচতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও নিরিহ লোকজনকে ফাঁসিয়েছেন।
ফম/এমএমএ/