হরিণা ফেরিঘাটে অসহায় গাড়ির চালক ও শ্রমিকদেরকে মারধর

ছবি: সংগ্রহীত।

চাঁদপুর: চাঁদপুর সদর উপজেলার হরিনা ফেরিঘাটে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কাঁচামাল ও মৎস্য পরিবহনকৃত গাড়ির চালক এবং শ্রমিকদেরকে নানাভাবে হয়রানি হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি কোন প্রকার ত্রুটি না পাওয়ার পরেও স্থানীয় দালাল চক্রের সহযোগীতায় খুটিনাটি ত্রুটি দেখিয়ে চালকদেরকে মারধরসহ নানা ধরনের ভয়ভিতি দেখানো হচ্ছে মর্মে আহত কয়েকজন জানান। এ বিষয়ে অসহায় গাড়ির চালক এবং শ্রমিকরা চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে সহানুভুতি কামনা করেছেন।

ঘটনার বিবরনে জানাগেছে, হরিনা ফেরিঘাটে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কাঁচামাল ও মৎস্য পরিবহন করে গাড়ির চালক ও শ্রমিকরা এই রুট দিয়ে দির্ঘদনি ধরে চট্টগ্রামে আসা যাওয়া করে। উক্ত কাঁচামাল ও মৎস্য পরিবহনকারী গাড়ির চালকরা আসা যাওয়ার পথে নিজস্ব জেলা থেকে গাড়ি লোড করার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহীনি ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই বাছাই শেষে ক্লিয়ার কাগজ নিয়েই ফেরি পাড় হয়। পরবর্তিতে সেসব গাড়িকে চাঁদপুর হরিনা ফেরিঘাটে না থামিয়ে একটু দূরে নিরিবিলি স্থানে গাড়ি থামায় এবং গাড়ি চেকিং করার নামে নানান ধরনের হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে।

গত বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১২ টায় সাতক্ষিরা থেকে আগত যশোর ট-১১৫৬-৪৮ নাম্বারের গাড়িটিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহীনি পোষাক পরিহিত কয়েকজন ও স্থানীয় দালালদের সহযোগীতায় গাড়িটিকে রোধ করে। এ সময় স্থাণীয় হাবিব নামের এক দালালসহ আরো কয়েকজনকে দিয়ে গাড়ির সমস্ত মালামাল চেকিং করার পর কোনপ্রকার ত্রুটি না পেলেও অজ্ঞাত কারনে চালক ও শ্রমিকদেরকে ৩ঘন্টা গাড়িসহ আটক করে রাখে বলে জানায় আহত শ্রমিকরা। কেন শ্রমিকদেরকে আটকে রাখা হয়েছে তার কারন জানতে চাইলে উল্টো তাদেরকে প্রচন্ড মারধর করে। এ সময় সাতক্ষিরা সদর এলাকার হেলাল উদ্দিন (২৩) শ্রমিকের হাত ভেঙ্গে দেয় এবং একই এলাকার মোঃ আলামিনকে গুরুতর আহত করে।

এ বিষয়ে আহত শ্রমিক হেলাল জানান, আমরা অসহায় শ্রমিক। সাতক্ষিরা থেকে চাঁদপুর হয়ে চট্রগ্রাম মাছ পরবহন করে নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের গাড়ি হরিনা ফেরিঘাট থেকে একটু দূরে চান্দ্রা চৌরাস্তা রোডের শুরুতে থামিয়ে চেক করে। যদি আমাদের কোন ত্রুটি পায় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে আইনের মাধ্যমে শাস্তি দিবে। কিন্তু কোন ত্রুটি না পেয়ে কেন আমাদেরকে মারধর করলো।

আহত শ্রমিক হেলাল আরো জানান, আমরা অন্ধকারে কাউকেই চিনিনা। এমনকি কারো নাম জনতে পারিনি। তবে হাবিব নামে স্থাণীয় একটি ছেলে আমাদের গাড়ি চেক করে। পরবর্তিতে জানতে পেরেছি সে এখানকার দালাল।

এ বিষয়ে সাধারন অসহায় আরো কয়েকজন গাড়ি চালক জানান, হরিণা ফেরিঘাটে প্রচন্ডভাবে দালালচক্রের সহযোগীতায় হয়রানি করা হয়। আমরা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান চাই।

এ বিষয়ে হরিনা নৌ থানার ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমান জানান, এ ধরনের কোন বিষয় তার অবগত নয়। তাছাড়া সে সময় নৌ পুলিশ কোন অভিযানে থাকলে তিনি তা জানতেন।

পরবর্তিতে বিষয়টি চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুর রশিদকে জানানো হলে তিনি বলেন, ঐ সময় ঘটনাস্থলে সদর মডেল থানার কোন টহল পুলিশ ছিলো কিনা তা তিনি তদন্ত করে দেখবেন।

এ বিষয়ে অসহায় গাড়ির চালক এবং শ্রমিকরা চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সু-বিচার কামনা করেন। ভবিষ্যতে যাতে দুর দুরান্ত থেকে আসা কোন শ্রমিক এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার না হয়।

ফম/এমএমএ/

মিজান লিটন | ফোকাস মোহনা.কম