‘স্বাধীনতা বিরোধীরা ছাড়া যুদ্ধকালীন সময় প্রতিটি বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা’

--- বরেণ্য কথাসহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক এমদাদুল হক মিলন

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বরেণ্য কথাসহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক এমদাদুল হক মিলন। ছবি: ফোকাস মোহনা.কম

চাঁদপুর : বরেণ্য কথাসহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক এমদাদুল হক মিলন বলেছেন, স্বাধীনতা এমন একটি শক্তি, যে শক্তি উধাও হয়েগেলে রাজ্য নিঃস্ব হয়ে যায়, দুর্নীতি এবং দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। সুতরাং মনে রাখতে হবে স্বাধীনতার প্রতীকটি যেন কোন জাতি যেন কখনো হারিয়ে না ফেলে। ১৯৭১ সালে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ অর্জন করেছি। ১৯৭১ বলতে আমরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসটা ভাবি। প্রকৃত ইতিহাস কিন্তু আমরা আসলে জানিনা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সাড়ে ৭ কোটি মানুষ ছিল। আমি মনে করি, সে মানুষের মধ্যে কিছু স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার ও আলবদর ছাড়া সে সময়কার প্রতিটি বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা। কারণ মুক্তিযুদ্ধছিল একটি গণযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সর্বস্তরের মানুষ করেছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ফেনিতে একটি ছোট্ট মেয়ের ভূমিকার উদাহরণ টেনে যুদ্ধের অংশগ্রহন সর্বসাধারনের ভূমিকা তুলে ধরেন।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দুইদিনব্যাপী জেলা সাহিত্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা অনেকেই বলি মুক্তিযুদ্ধের গল্প। মুক্তিযুদ্ধ কোন গল্প নয়। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জীবনের সবচাইতে বড় গৌরবের ঘটনা। ঘটনা এবং গল্পের মধ্যে অনেক ব্যবধান আছে। গল্পে কল্পনা থাকে, ঘটনায় কোন কল্পনা থাকে না ঘটনা সত্য। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কিন্তু সর্বস্তরের মানুষ একত্রিত হয়ে করেছিল।

তিনি আরো বলেন, একটা সময় লিখে জীবন ধারণ করতে গিয়ে অনেক লিখতে হয়েছে। একটা সময় আমার মনে হয়েছে একজন লেখক শুধুমাত্র জীবন ধারণ এবং টাকার জন্য লিখবেন না। একজন লেখক লিখবেন রাষ্ট্রের ও সমাজের দায়বদ্ধতা থেকে, মানুষের প্রতি ভালোবাসার জন্য। সে ভালবাসা থেকে আমি নুরজাহান নামে একজন মেয়েকে নিয়ে ১৮ বছর সময় নিয়ে বই লিখেছি।

তরুন লেখকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি তাদেরকে একটা কথাই বলি, যদি আপনি লিখতে চান, আপনার কোন শিক্ষক নেই। আপনার শিক্ষক শুধুমাত্র বই। ভাল বই ছাড়া আপনার কোন শিক্ষক নেই। ভাল বই পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন বড় বড় লেখকরা কি লিখেছেন। তাদের লেখার ধরণ বুঝতে পারবেন এবং বিশ্ব সাহিত্যের ধরণ জানতে পারবেন। আজকে যে ১৭০জন লেখক এই মেলায় অংশগ্রহন করেছন তাদের সকলকে আমি অভিনন্দন জানাই। এই জেলার অনেক বড় বড় লেখক আছেন, যাদের সাথে আমার ব্যাক্তিগত সম্পর্ক ও স্মৃতি রয়েছে।

প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি।

জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. আমিনুর রহমান সুলতান।

চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক কালচারাল অফিসার আয়াজ মাবুদ এর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও সাহিত্য মেলার আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব ইমতিয়াজ হোসেন।

ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম