সশ্রস্ত্র বাহিনী দিবসে চাঁদপুরে উন্মুক্ত ছিল বানৌজা পদ্মা

চাঁদপুর: মহান সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে চাঁদপুর মেঘনা মোহনার ডাকাতিয়া নদীর রকেট ঘাটে সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর জাহাজ পদ্মা।

সোমবার (২১ নভেম্বর) বেলা ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত চাঁদপুর শহর ও আশপাশের লোকজন জাহাজটিতে প্রবেশ করে যান্ত্রিক কাঠামো পরিদর্শন করেন। জাহাজে থাকা কর্মকর্তারা দর্শনার্থীদের যান্ত্রিক কাঠামো, বিমান বিধ্বংসী কামান ও জাহাজের বিভিন্ন অংশের কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দেন।

শহরের বাসিন্দা ওমর ফারুক ও রাকিব হোসেন জানান, জাহাজটি ঘুরে দেখে খুবই ভাল লেগেছে। এটি সম্পর্কে এর আগে কোন ধারণাই ছিল না।

শহরের বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাহাজটি দেখার জন্য আসেন। তাদের মধ্যে আরিফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, খুবই চমৎকার একটি জাহাজ দেখার সুযোগ হয়েছে। এই দিবস সম্পর্কেও আমার পূর্বে জানা ছিল না।

জাহাজের অধিনায়ক জহরুল হক বলেন, দেশের সর্বস্তরের নাগরিককে মহান সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌ বাহিনী মুক্তিকামী জনতার সাথে একাত্মততা গোষণা করে তাদের সাথে গলায় গলা মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কম-বেশী অনেকেরই জানা আছে। তবে ২১ নভেম্বর যে সশস্ত্র দিবস পালিত হয়, এটির গুরুত্ব এবং তাৎপর্য কতটুকু অনেকেই জানেন। অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্যের সমতূল্য হচ্ছে এই দিবস।

তিনি আরো বলেন, যুদ্ধ জাহাজ আজকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার উদ্দেশ্যে হচ্ছে-বাংলাদেশের জনগণ নৌ বাহিনীর জাহাজ সম্পর্কে জানতে পারে। আমরা জাহাজ কিভাবে অভিযান পরিচালনা করি এবং কি ধরণের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি এসব সম্পর্কে ধারণা দেয়া।

জাহাজের সাব লেফটেন্যান্ট সিফতা জানান, স্ত্রশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ১৯ নভেম্বর বেলা ২টায় চট্টগ্রাম আরআরবি থেকে চাঁদপুর রকেট ঘাটে এসে জাহাজটি পৌঁছায়। ২২ নভেম্বর সকালে এটি আবার পুনরায় একই স্থানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে চাঁদপুর ত্যাগ করবে। মহান সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম, বরিশাল পটুয়াখালি, খুলনা, চাঁদপুর ও ঢাকা সদরঘাটে যুদ্ধ জাহাজ সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এই যুদ্ধ জাহাজে একজন কমান্ডার, নেভিগেটিং, এক্সিকিউটিভ, প্রকৌশলী ও ইলেকট্রিকসহ ৪জন অফিসার এবং ৫৫জন নাবিক রয়েছে।

ছবি: সংগ্রহীত।

এদিকে শেষে বিকেলে জাহাজটি পরিদর্শনে যান চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আসিফ মহিউদ্দিন, চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ, দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সোহেল রুশদী, চ্যানেল টোয়েন্টিফোর এর জেলা প্রতিনিধি আল ইমরান শোভন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো: মেশকাতুল ইসলাম প্রমুখ ।

জানাগেছে, বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ পদ্মা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পদ্মা শ্রেণির প্রথম ব্যাচের প্যাট্রোল ক্রাফট। এটি গণচীনের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত হয়। জাহাজটি উপকূলীয় অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, জলদস্যুতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য ২০১০ সালে ২ মে খুলনা শিপইয়ার্ড এটি নির্মিত হয়। ২০১২ সালে ৮ অক্টোবর জাহাজটিকে প্রথম বারের মত পানিতে ভাসানো হয়। ২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি বানৌজা পদ্মা বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে।
ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম