সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে দক্ষ ও আত্মনির্ভরশীল করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে

চাঁদপুরে ‘প্রান্তিক পেশাজীবী জীবনমান উন্নয়ন’ প্রকল্পের অবহিতকরণ সেমিনার

চাঁদপুর: চাঁদপুরে ‘প্রান্তিক পেশাজীবী জীবনমান উন্নয়ন’ প্রকল্পের অবহিতকরণ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (১জুন) সকাল ১০টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা সমাজ সেবা কার্য্যলয়ের উদ্যোগে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন প্রান্তিক পেশাজীবীদের খুঁজে বের করে তালিকাভুক্ত করার নির্দেশ দেন।

তিনি বলেছেন, “কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, আর সেইসঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের প্রাচীন পেশা ও ঐতিহ্য। এখনই উদ্যোগ না নিলে সমাজের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশ এক সময় ইতিহাস হয়ে যাবে।”

‘বাংলাদেশ প্রান্তিক পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন (২য় ফেইজ)’ প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের অবহিতকরণ সেমিনার জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয় যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সমাজসেবা অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. বিল্লাল হোসেন খন্দকার,।

প্রধান অতিথির বক্তব্য জেলা প্রশাসক বলেন, “বর্তমানে কর্মরত মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমছে। তরুণ সমাজ আগের মতো ঐতিহ্যবাহী পেশাগুলো গ্রহণ করছে না। এর ফলে মৃৎশিল্প, তাঁত, কামারশিল্প কিংবা বাঁশের কাজের মতো বহু প্রাচীন পেশা হারিয়ে যাচ্ছে। এদের যদি এখনই খুঁজে না বের করা হয়, প্রশিক্ষণ না দেওয়া হয়-তাহলে একসময় শুধু পেশাই নয়, আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও হারিয়ে যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখে না-বরং তাদের দক্ষ করে আত্মনির্ভরশীল করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। এজন্য একটি হালনাগাদ ডেটাবেজ প্রস্তুতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত উপকারভোগীদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করা হবে। নতুন করে উপকারভোগীদের শনাক্ত করে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলা প্রশাসক আরও বলেন, “প্রান্তিক পেশাজীবীরা আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা হারিয়ে গেলে কেবল পেশা নয়, আমাদের বহু পুরোনো ঐতিহ্যও হারিয়ে যাবে। তাই সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়াটা জরুরি। তাদের আত্মনির্ভরশীল করতে হলে সময়োপযোগী দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” সেমিনারে প্রকল্পের উদ্দেশ্য, লক্ষ্যমাত্রা, বাস্তবায়ন কৌশল ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। প্রান্তিক পেশাজীবী যেমন-কামার, কুমার, তাঁতী, নরসুন্দর, হিজড়া, হরিজন, ফেরিওয়ালা, রিকশাচালক, দিনমজুরসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তা পাবেন। তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্থনীতির মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. এরশাদ উদ্দিন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল চাঁদপুর
মো. আব্দুল হান্নান রনি, পৌর প্রশাসক মো. গোলাম জাকারিয়া, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর এর উপপরিচালক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, সিভিল সার্জন প্রতিনিধি ডা. রাওশানারা নাসরিন, জেলা তথ্য অফিসার তপন বেপারী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ, কোষাধক্ষ্য কে এম সালাহউদ্দি।

এছাড়াও সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, ও প্রান্তিক পেশাজীবীদের প্রতিনিধি ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

ফম/এমএমএ/

কে এম সালাহউদ্দিন | ফোকাস মোহনা.কম