সরকারি গাছ কেটে বেকায়দায় বিএনপি নেতা

চাঁদপুর : চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নে গ্রামীন পাকা সড়কের পাশের একটি মূল্যবান রেইনট্রি গাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে কেটে বেকায়দায় পড়েছেন লোকমান খান নামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। কাটার সময় ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ গিয়ে তাকে গাছ না কাটার জন্য নিষেধ করেন। কিন্তু তিনি তাদের কথায় কর্ণপাত না করে গাছ কেটেও ক্রেতাকে দিতে পারছেন না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি জানার পর ওই গাছ ইউনিয়ন পরিষদে দিয়ে আসার জন্য এবং আইনী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিয়নের মাঝার সড়কের কুমারডুগি গ্রামে ইউনিয়ন বিএনপির ওই নেতা ৫জন শ্রমিক এবং বহিরাগত আরো বেশ কয়েকজন নিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা মূল্যমানের সরকারি এই গাছ কাটেন। এরপর গাছের অধিকাংশ ডালপালা তার বাড়িতে নিয়েগেলেও গাছের গুড়ির বড় বড় অংশ ঘটনাস্থলে রেখেদেন।

বিকেলে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়েও গাছকাটার সত্যতা মিলে। এই সময় ঘটনাস্থলে আসেন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামাল মিজি। তিনি বলেন, প্রয়োজনে গাছ কাটা হয়েছে। কার সাথে অনুমতি নিয়ে গাছ কাটবে?

স্থানীয় ব্যবসায়ী সুমন খান বলেন, পাশের খান বাড়ীর শহীদ খানের ছেলে লোকমান খান শ্রমিক এনে এই গাছ কাটে। এই গাছ তার নিজের বলে তিনি দাবী করেছেন। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির নেতা।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, এর আগেও রাজনৈতিক পরিচয়ে ইউনিয়নের একাধিক সড়ক থেকে কোন ধরণের অনুমতি ছাড়াই সরকারি বেশ কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে।

গ্রাম পুলিশ বাশার ও আলী হোসেন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমাদেরকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন। আমরা লোকমান খানকে গাছ না কাটার জন্য নিষেধ করলেও তিনি আমাদের কথা কর্ণপাত করেননি। গাছ কাটার সময়ের ছবি ও ভিডিও করে আমরা চলে এসেছি এবং ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার জন্য বলেছি। তিনি আমাদের সাথে খুবই খারাপ আচরণ করেছেন।

এই বিষয়ে লোকমান খান এলোমেলো কথা বলেন। তিনি একবার বলেন গাছ মসজিদের। আবার বলেন এটি মাদ্রাসার কাজের জন্য কেটেছি। কিছু সময় পরে বলেন আমার নিজের গাছ। স্থানীয় সরকার বিভাগের সড়কের এই গাছ কাটার জন্য অনুমতি লাগে আপনি কী অনুমতি নিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, অনুমতি নেইনি। তবে পরিষদে যাওয়ার জন্য বলেছে। তিনি গাছটি বিক্রি করে দিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি আবারও এলোমেলো কথা বলতে শুরু করেন।

শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ কুদ্দুছ আখন্দ রোকন বলেন, সকালে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন মাহমুদ গাছকাটার বিষয়টি আমাকে জানান। আমি তাৎক্ষনিক দুইজন গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছি। তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছে এবং গাছ না কাটার জন্য বলেছে। এরপর বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানোানর পর তিনি কাটা গাছ এনে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলেছেন।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, গাছকাটার বিষয়টি বিকেলে আমাকে ইনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। অনুমতি না নিয়ে ওই ব্যাক্তি গাছ কেটেছেন। এই বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেছি।

ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম