সদর উপজেলা মসজিদ মার্কেটের দোকান ভাড়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ!

চাঁদপুর: চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের মসজিদের দোকান ভাড়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানাগেছে, ঐ মসজিদের উন্নয়ন,  ইমাম মুয়াজ্জিনদের বেতন ও রক্ষণাবেক্ষণর জন্য পরিষদের সামনে একটি মার্কেট নির্মান করা হয়।তার আয় ব্যায় থেকে এগুলো করার কথা থাকলেও তা নিয়মিত করা যাচ্ছে না।কারন হিসেবে জানাযায় এই মার্কেটে ৭ টি দোকান রয়েছে, যাদের নামে দোকানগুলো বরাদ্দ রয়েছে তারা নিয়মিতভাবে ভাড়া পরিষদ করছেন না।তারা পরিষদ থেকে অল্প টাকায় দোকানগুলো তাদের নামে বরাদ্ধ নিয়ে, বাহিরে অধিক টাকা হারে ভাড়া দিয়ে মুনাফা আদায় করে নিজেরা লাভবান হচ্ছে। এতেকরে তারা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রাতারনা করছে,এমনকি সরকার ও অধিক রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের কারনে। খোজ নিয়ে জানাযায় এই দোকান গুলো যাদের নামে বরাদ্দ রয়েছে তারা হলেন।
সাত্তার ছিদ্দিকী,(হুন্ডার গ্রেরেজ),সাজু ডাক্তার, লিটন গাজী,(ঔষুধের দোকান),দুলাল শেখ (ষ্টেশনারী)নাজিম দেওয়ানের স্ত্রীর নামে,(ফটোস্টাট দোকান),বিল্লাল মিয়া,(চা- দোকান)নাছির পাটোয়ারীর (পাটোয়ারী ষ্টোর),দুলাল শেখের  (স্টেশনারী)।এই দোকান গুলো ৩ বছরের জন্য লিজ নেয় দোকানিরা। তৎকালীন চেয়ারম্যান  ইউছুফ গাজীর আমলে। এই দোকান গুলো ভাড়া দেয়া  হয় মসজিদের উন্নয়নের জন্য।
শর্ত ছিল ৩ বছর অন্তর অন্তর  ১০% ভাড়া বৃদ্ধি করে লিজ নবায়ন করা হবে। কিন্তু অদ্য পর্যন্ত এক টাকাও ভাড়া বৃদ্ধি না করে পূর্বের নিয়মানুযায়ী  ভাড়া দিচ্ছেন। কিন্তু তাও আবার ঠিকমতো পরিষোধ করছেন না তারা। এর মধ্যে কিছু দোকানী মসজিদ কমিটির নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে,অন্যত্র প্রায় ৪/৫ লক্ষ টাকা ছালামী ও ৫/৬ হাজার টাকা ভাড়া দিচ্ছেন বলে জানাযায়। অথচ এতো টাকা বাহিরে ভাড়া দিয়ে অধিক মুনাফা নিয়ে ও মসজিদের ১ হাজার থেকে ৬ শত টাকা ভাড়া ও তারা নিয়মিত পরিষদ করছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।আরো জানাযায়, তৎকালীন সময়ে প্রভাব বিস্তার করে
দোকান গুলো ২ লাখ ৫০হাজার টাকা করে ছেলামি দিয়ে নামমাত্র মূল্যে ভাড়া  নির্ধারন করে উপজেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ নেয়।
তারা এতো প্রভাবশালী চক্র যে, বিগত সরকারের আমলে মসজিদটির উন্নয়নের জন্য কথা থাকলেও এই সকল দোকানিদের কারনে তা কখনো আলোর মুখ দেখেনি। কারন মসজিদের বহুতল ভবন হলে একই স্থানে দোকানের দখল তাদের নামে  নাও থাকতে পারে এই আশঙ্কায় তারা তা নয়ছয় বলে আটকে দিত।
আরো জানাযায়, উপজেলার ২ টি রুম  দু-একজন ব্যবসায়ী তাদের জিম্মায় তালাবদ্ধ করে রেখেছিল দীর্ঘ দিন। পরে অনেকদিন পরে তাদের কাছ থেকে ছারিয়ে উপজেলার আয়ত্বে নেয়।রুম দু, টি হলো উপজেলা শিক্ষা অফিসে যাওয়ার পথে সাবেক উপজেলা ভুমি অফিসের নিচ তলায়।এক সময়ে এই রুম দুটি টি-স্টল নামে পরিচিত ছিল।
এবিষয়টি নিয়ে বিগত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম দেওয়ান উন্নয়ন কমিটির মিটিংয়ে তাদেরকে ডেকে এই রুম দুটি তারা কেন এতো বছর ধরে আটকে রেখেছে গোডাউনের নাম করে তার জবাব দিতে বলে। উপজেলা পরিষদে কোন অর্থই তারা এই রুম দুটির জন্য  অদ্য পর্যন্ত পরিষোধ করেনি বলে জানাযায়।  উপজেলা পরিষদের পুকুরসহ বিভিন্ন গাছগাছালি নামকাওয়াস্তে টেন্ডার দেখিয়ে  তারা সিন্ডিকেট করে বহুবছর ধরে  পরিষদের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে পরিষদের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজসে।
এলাকাবাসি আরো জানায়, এই চক্রটি মসজিদের দোকান নামকাওয়াস্তে লিজ নিয়ে কোনরকম লোক দেখানো ব্যবসা পরিচালনা করে এখানে বসে। কিন্তু তাদের মুল কাজ হলো উপজেলা পরিষদ কেন্দ্রিক, এই পরিষদের সকল কাজের খবর তাদের কাছে অনেক পূর্বেই চলে আসে।খোজ নিয়ে জানাযায় তারা একেকজন গাড়ী,বাড়িসহ বহুঅর্থ সম্পদের মালিক বনেছেন এই উপজেলাকে ঘিরে। ৭টি দোকান থাকা সর্তেও মসজিদ কমিটির ফান্ড বর্তমানে শুন্যের কোঠায়। তাই নিয়মিত বেতন দিতে পারছেন না ইমাম ও মুয়াজ্জিন কে।
এবিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত জানান, তিনি বিষয়টি জানতে পেরে নিজ উদ্যোগে উপজেলার ফান্ড থেকে ইমাম ও মুয়াজ্জিনের বেতন দ্রুত পরিষদ করেন।তিনি আরো বলেন, ইমাম ও মুয়াজ্জিন তারা সন্মানিত ব্যাক্তি এই বেতনের উপর তাদের সংসার পরিচালিত হয় তাদের বেতন আটকে থাকবে তা হতে পারেনা।এতোদিন এই মসজিদ কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান তাই আমি এই বিষয়টি নিয়ে তেমন একটা খোজ খবর রাখিনি।  বর্তমানে এই কমিটির সভাপতির দায়িত্ব আমার উপর আশার পর আমি দ্রুত কমিটির সকলকে নিয়ে জরুরি একটি মিটিংয়ের ঘোষণা দেই।
এবং সেখানেই জানানো হবে যারা নিয়মিত এই দোকানগুলোর ভাড়া পরিষদ করছেন না তাদের ব্যাপারে নিয়মানুযায়ী  ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আর বর্তমান বাজার মূল্যে এখন থেকে ভাড়া নির্ধারন করা হবে।পূর্বের ভাড়াটিয়ারা যদি তা পরিষদ করতে রাজি না থাকে, তাহলে অন্যত্র ভাড়া দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে  ব্যবসায়ী ছাত্তার সিদ্দিকির সাথে আলাপকালে তিনি জানান, আমি ৬ শত টাকা করে ভাড়া পরিষদ করে আসছি। আমার তেমন ভাড়া বকেয়া নেই।  আর ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি তিনি স্বীকার করে বলেন, উপজেলা পরিষদ থেকে আমাদেরকে অদ্য পর্যন্ত এবিষয়ে কোন চিঠি দেওয়া হয়নি।প
রে উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, আমরা তাদেরকে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে প্রতিনিয়তই অবগত করে আসছি কিন্তু তারা তৎকালীন রাজনৈতিক প্রভার বিস্তার করে পূর্বের ভাড়াই পরিষোধ করে আসতেন।আমাদের কথার কোন গুরুত্বই দিতেন না।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রসাশন যেন দ্রুত একটি সঠিক  সিদ্ধান্তে পৌঁছান তেমনটিই আশা করছেন এলাকাবাসী ও মুসল্লীরা।
ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম