শাহরাস্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : ৫ নারী চিকিৎসকের একজনকেও পাওয়া যায়নি বহিঃবিভাগে

শাহরাস্তি (চাঁদপুর): চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের টামটা গ্রামের মরিয়ম নামে একজন রোগী আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট নিয়ে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন কক্ষে ছুটাছুটি করছেন একজন নারী চিকিৎসককে দেখাবেন বলে, অথচ দুপুর ১২ টা পর্যন্ত একজন নারী চিকিৎসককেও উপস্থিত পান নি তিনি। চলতি মাসের ১৫ তারিখে তিনি ডাক্তার দেখিয়েছেন। পেটের আল্ট্রাসোগ্রামের জন্য তাকে আসতে বলা হয় ২৯ তারিখে। তিনি মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে অপেক্ষা করছেন একজন নারী চিকিৎসকের জন্য।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বেলা ১২ টায় চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃবিভাগের চিত্র এটি।

ওই সময় চিকিৎসা নিতে আসা চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের কোঁয়ার গ্রামের তাসলিমা খাতুন জানান, গাইনি চিকিৎসকের কাছে এসেছিলেন তিনি। কাউকে না পেয়ে চলে যাচ্ছেন।

রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের ফাহিমা আক্তার জানান, হাসপাতালে মহিলা ডাক্তার না পাওয়ায় তিনি বিকেলে প্রাইভেট চেম্বার থেকে ব্যবস্থাপত্র নিবেন। এরা ছাড়াও বহির্বিভাগের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় ৬০-৭০ জন মহিলা রোগী অপেক্ষা করছেন ডাক্তারের জন্য।

এসময় চিকিৎসা নিতে আসা আরও কয়েকজন রোগী জানান, আমরা সকাল থেকে টিকেট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি অথচ একজন নারী চিকিৎসক ও বর্হিবিভাগে নেই।

দুপুর ১২ টার পরে ডা.আয়েশা সিদ্দিকার কক্ষের সামনে গিয়ে দেখা যায়, নারী রোগীদের লম্বা লাইন অথচ ভিতরে উপস্থিত নেই তিনি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আজকে তার ডে অফ তিনি আজ রোগী দেখবেন না।

মেডিকেল অফিসার প্রিয়াঙ্কা পোদ্দারের কক্ষে গিয়ে দেখা যায় তিনিও কক্ষে অনুপস্থিত। একই ভাবে মেডিকেল অফিসার ডা. সুপর্ণা সরকার, ডা. শাহানা শারমিন ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আকলিমা জাহানের কক্ষে গিয়েও পাওয়া যায়নি কাউকে।

৫ জন নারী চিকিৎসকের কেউই হাসপাতালে নেই বিষয়টি জানতে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.অচিন্ত্য কুমার চক্রবর্তীর সাথে সাক্ষাৎ করা হলে তিনি বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ না করতে অনুরোধ জানান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি আবাসিক মেডিকেল অফিসার হলেও অফিস সময় ব্যতীত হাসপাতালে থাকেন না, হাসপাতালের বাইরে ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি।

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আকলিমা জাহানের খোঁজ করা হলে তিনি হাসপাতালে নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ওই সময় রোগীর স্বজন ও এলাকার লোকজন অভিযোগ জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিয়মিত তার কার্যালয়ে আসেন না। আসলেও দুপুর না হতেই তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করেন। তারা আরও জানান, জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর সরকারী ডিগ্রি কলেজর উত্তর দিকে অবস্থিত পালস এইড জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। সেখানে প্রতিদিন রোগী দেখার শিডিউল ঠিক রাখতে তিনি সেখানে উপস্থিত থাকতে হয়।

মুঠোফোনে বক্তব্য জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আকলিমা জাহান জানান, তিনি সিভিল সার্জন অফিসে মিটিং এ আছেন, তাছাড়া ডা.প্রিয়াঙ্কা পোদ্দার, ডা. আয়েশা সিদ্দিকা ও শাহানা শারমিন ডিউটিতে থাকার কথা আর সুর্পণা সরকার ট্রেনিং এ রয়েছেন।

ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম