শাহরাস্তি ডাকাতিয়ার পাড়ে তৈরী হচ্ছে নান্দনিক ওয়াকওয়ে

চাঁদপুর : চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া ব্রিজ এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে ১ কিলোমিটার জুড়ে তৈরি হচ্ছে ওয়াকওয়ে। এটির কাজ শতভাগ বাস্তবায়ন হলে জেলার মধ্যে অন্যতম এবং নান্দনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হবে। এটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখনেই লোকজন আসতে শুরু করেছেন। প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ওয়াকওয়ের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)।

জানাগেছে, প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য স্থানে এই অভিনব পদ্ধতি গ্রহণ করে পরিবেশ বান্ধব ব্যতিক্রমী ওয়াকওয়ে করার উদ্যোগে নেন চাঁদপুর-৫ (শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জ) আসনের সাংসদ ও মুক্তিযুদ্ধের ১ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম।

সম্প্রতি সরেজিমন ঘুরে দেখাগেছে, নির্মাণ কাজ শেষ করতে ব্যস্ত শ্রমিকরা। ডাকাতিয়া নদীর পাড় বাঁধ দিয়ে সূচিপাড়া ব্রিজ থেকে শুরু করে ছিখটিয়া ব্রিজ পর্যন্ত তৈরী করা হয়েছে ওয়াকওয়ে। দুই পাশে রেলিং দিয়ে ওয়াকওয়ে এবং কিছুটা দুরুত্ব রেখে নদীমুখে করা হয়েছে বসার স্থান। পুরো এককিলোমিটার জুড়ে লাগানো হচ্ছে বিভিন্ন জাতের গাছের চারা। এই ওয়াকওয়ে ঘিরে এখানকার জমির দামও অনেকগুন বেড়ে যাচ্ছে বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নদীর পাড়ে ঘুরতে আসা সূচিপাড়া এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী জুবায়ের, আব্দুর রহমান ও ফয়সাল জানান, আমাদের বাড়ীর নিকটে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে এমন সুন্দর এবং দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে তৈরী হচ্ছে আমরা জানতামনা। দুর থেকে দেখেছি। কিন্তু আজকে এসে দেখলা খুবই সুন্দর। যে কেউ এখানে আসলে সময় কাটাবে এবং প্রাকৃক দৃশ্য দেখে মনটাও ভাল হয়ে যাবে।

ওয়াকওয়ে দেখতে আসা দন্ত চিকিৎসক মাসুদ হাসান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি তৈরী হচ্ছে দেখেই চলে আসলাম। আমার দেখা নদী পাড়ে এ ধরণের ওয়াকওয়ে দেশের অন্য কোথাও নেই। এটির কাজ শেষ হলে পুরো শাহরাস্তির উপজেলার চিত্র পাল্টে যাবে।

শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হুমায়ন রশিদ বলেন, স্থানীয় সাংসদের একক উদ্যোগে উপজেলার শাহরাস্তি পৌর এলাকায় এক কিলোমিটার জুড়ে যে ওয়াকওয়ে বনানো হচ্ছে, এটির নির্মাণ কাজ অনেকটা শেষ হওয়ার পথে। এটি তৈরী করা হলে দুটো লাভ হবে। প্রথমত নদী পাড় ঘিরে একটি নান্দনিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা, দ্বিতীয়ত নদী ভাঙন থেকেও দীর্ঘস্থায়ীভাবে নদী পাড়কে রক্ষা করা। যেটি সম্পূর্ণ যানবাহন ও ধুমপানমুক্ত থাকবে। পাশাপাশি এখানে বিনোদন পার্ক, আধুনিক রেসটুরেন্ট ব্যবস্থা ও পার্কি ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। তাছাড়া পর্যটকদের নদীতে প্যাডেল চালিত নৌযানও থাকছে। যেটি পুরো চাঁদপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্থান পাবে।

বিআই ডাব্লিউটিএ চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বরে এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এতে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে খুব শিগগিরই এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মেজর (অব) রফিক ইসলাম বীর উত্তম এমপি।

এটি নির্মাণ প্রসঙ্গে মেজর (অব) রফিক ইসলাম বলেন, আমি ৯৬ সাল থেকে টানা এই আসনে সাংসদ হিসেবে আছি। আমার এলাকায় ৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়নমুলক কাজ করেছি। তবে জনগনের মাঝে আমি আমার একটি স্মৃতি ধরার রাখাতে এই ওয়াকওয়ে করে গেলাম। যাতে করে এই এলাকার মানুষকে বিনোদনের জন্য কোথাও যেতে না হয়। আর এটি করতে পেরেছি আমি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি হওয়ার কারণে। তাই আমি এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে এটি বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।

ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম