চাঁদপুর: চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা না থাকায় গত গত ২ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এছাড়া এ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব টেন্ডার ও ক্রয় কমিটির কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে যাওয়ায় ঔষধ, খাদ্য ঠিকাদার বিল, লিলেন, মনোহরি সামগ্রী ক্রয় ও অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম থেমে আছে।
জানা গেছে, গত ২০ আগষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী হাসান মজুমদার বদলি হয়ে তাঁর পূর্ববর্তী কর্মস্থল চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। এরপর চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে মেডিকেল অফিসার ডা. সারোয়ার হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দ্বায়িত্ব ন্যাস্ত করা হয়। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ডা. সারোয়ার হোসেনের আর্থিক বিষয়ে (আয়ন-ব্যয়ন) কোন ক্ষমতা না থাকায় গত আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের বেতন পান নি উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী। এমনকি হিন্দু কর্মচারীরা বেতন ও বোনাস ছাড়াই কাটিয়েছেন দুর্গোৎসব।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক সকল প্রকার বিল ও টেন্ডারসহ অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স বিমল ভট্টাচার্য জানান, গত ২ মাস ধরে বেতন পাই না। দূর্গা পুজোর বোনাস ছাড়াই অর্থকষ্ট নিয়ে এবারের পুজা সম্পন্ন হয়েছে।
স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো: ফায়দুল্যাহ মিঞা জানান, ২ মাস বেতন পাই না। আমিসহ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছি।
হাসপাতালের অফিস সহকারী মো. ইমাম হোসেন জানান, বেতনের বিষয়টি ছাড়াও টেন্ডার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় ঔষধ, খাদ্য ঠিকাদার বিল, লিলেন, মনোহরি বিল ও অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রমসহ সব ধরনের আর্থিক সকল বিল বন্ধ রয়েছে।
স্টোর কিপার মোস্তফা জানান, ইতোমধ্যে হাসপাতালের খাদ্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ কাল উত্তীর্ণ হলেও টেণ্ডার প্রক্রিয়া না হওয়ায় পূর্বের ঠিকাদার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ১ অক্টোবর হাসপাতালের মেডিকেল এন্ড সার্জিক্যাল রিকুইজিট (এমএসআর) টেন্ডারে ঔষধ, যন্ত্রপাতি, কেমিক্যাল রিএজেন্ট, গজ, ব্যান্ডেজ, তুলা, লিলেন সামগ্রী, ফার্নিচার এবং নন মেডিকেল এন্ড সার্জিক্যাল রিকুইজিট (নন এমএসআর) টেন্ডারে পথ্য, মনোহরি সামগ্রী ও লিলেন ধোলাই দরপত্র আহবানের কথা থাকলেও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা না থাকায় তা সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে হাসপাতালে ঔষধ ও স্টেশনারি সামগ্রীর মজুদ প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার ভারপ্রাপ্ত দ্বায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. সারোয়ার হোসেন জানান, তিনি দ্বায়িত্বে থেকে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আর্থিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে তাঁকে আয়ন-ব্যয়ন ক্ষমতা প্রদানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
ফম/এমএমএ/