শাহরাস্তিতে প্রান্তিকের প্রতারনার শিকার ভুক্তভোগীদের টাকা ফিরে পেতে মানববন্ধন

ছবি: ফোকাস মোহনা.কম

শাহরাস্তি (চাঁদপুর): চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার শোরসাক বাজারে অবস্থিত প্রান্তিক বহুমুখী সমবায় সমিতির প্রতারণার শিকার হওয়া ভুক্তভোগী গ্রাহকরা তাদের টাকা ফিরে পেতে মানববন্ধন করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ভুক্তভোগী গ্রাহকরা তাদের টাকা ফিরে পেতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া হাড়ইরপাড়া গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী ছালমা খাতুন জানান, তিনি ডিম বিক্রি করে ১ লক্ষ টাকা প্রান্তিক বহুমুখী সমবায় সমিতিতে জমা রেখেছেন কিন্তু এখন আর তারা টাকাও দিচ্ছে না, যোগাযোগও করছে না। তিনি তার টাকা ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। চেড়িয়ারা গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রী ফৌজিয়া জানান, তার স্বামীর পাঠানো বেশ কয়েক লক্ষ টাকা তিনি প্রান্তিকে জমা রাখেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তার স্বামী বাড়িতে আসবে। স্বামীকে তিনি কি জবাব দিবেন তাই নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় ভূগছেন। হাড়ইরপাড়া গ্রামের ইমাম হোসেন তার স্ত্রী হনুফা বেগমের নামে জমা রাখেন ২ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। ছালমা খাতুন তার ১ লক্ষ টাকা আদায়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।

তিনি জানান, তার স্বামী অসুস্থ, টাকার অভাবে তিনি চিকিৎসা করাতে পারছেন না। রাগৈ গ্রামের নাছিমা বেগম ৫ লক্ষ টাকা ফিওে পেতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এভাবেই প্রায় শতাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক মানববন্ধনে হাজির হয়ে টাকা আদায়ের দাবি জানান। এসময় তারা টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে প্রান্তিকের পরিচালক জসিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন জানান, প্রান্তিকের সমস্যা সমাধানের আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেই দিকে আমাদের নজর থাকবে।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১৫ অক্টোবর শাহরাস্তি উপজেলার শোরসাক এলাকার মোঃ জসিম উদ্দিনের পরিচালনায় ’ত প্রান্তিক বহুমুখী সমবায় সমিতি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এলাকার সাধারণ জনগনকে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখিয়ে সমিতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। শাহরাস্তি উপজেলার অনেকেই অধিক মুনাফার আশায় প্রান্তিকের সাথে যুক্ত হন। তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে গ্রাহকরা আকৃষ্ট কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। বিগত দুবছর যাবৎ প্রান্তিকের কার্যক্রম ধিরে ধিরে বন্ধ হতে থাকে। সর্বশেষ বছর খানেকের মাথায় তারা নিজেদের গুটিয়ে সমিতির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। গ্রাহকরা তাদের টাকা প্রাপ্তির আশায় শোরসাক বাজারে অবস্থিত প্রান্তিকের বন্ধ অফিসে এসে ফিরে যাচ্ছেন। ইতোপূর্বে ওই সমিতির ভুক্তভোগি গ্রাহকদের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও সদয় অবগতির জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য, সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অবহিত করা হয়েছে।

ফম/এমএমএ/ফআ/

ফয়েজ আহমেদ | ফোকাস মোহনা.কম