লাশকাটা ঘর (অণুগল্প)

প্রতিকী ছবি।
—যুবক অনার্য
একটি আধা হাসপাতাল। আধা পূর্নাঙ্গ ও কোয়ার্টার রুগী। এরা এডমিটেড।চিকিৎসা হচ্ছে আধা, কোয়ার্টার। চিকিৎসকগণ আধা কোয়ার্টার।পূর্নাঙ্গ থাকবার সম্ভাবনা আপাতত উড়িয়ে দেবার তালিকায় থেকে যাক।
করিডোর।পায়চারি।
আমি। সুজয়া।
অবিনাশ আধা এই হাসপাতালের আইসিইউতে এডমিটেড ও অপেক্ষমাণ।
অবিনাশ একদিন মিছিলে গিয়েছিলো একদিন মানব বন্ধন একদিন ইটপাটকেল  টিয়ার শেল।আজ অনশনে যেনো এক অদৃশ্য ইশারায় আকস্মিক ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া – এলোপাতাড়ি।  কেউ পেছন দিক থেকে কিছু একটা দিয়ে প্রচন্ড ইনজুর্ড করে দিয়েছে।মাথা থেকে তীব্র ব্লিডিং।অতঃপর আধা হাসপাতাল। আইসিইউ।
-মান্তু
:বল
-আমি আর নিতে পারছি না।
:নিতে পারার কথা তো নয়।
-মান্তু
:হুম
-অবি কি ফিরে আসবে?
:ফিরে আসবে – এই অবি না হোক অন্য কোনো অবি।
-নতুন সেই অবিও ইনজুর্ড হবে- এ রকম আইসিইউ-
এভাবে কতোদিন!
:নতুন কিছু  নয় ইতিহাস অভিন্ন বরাবর।
-ইতিহাস দিয়ে আমরা কী করবো।আমি আমাদের কথা বলছি।
:এভাবে বলতে পারে কয়জন!
-সিরিয়াসলি টেক কর।
:আমি কে? আমার টেক করায় কিছু এসে যায় না।
-মান্তু
:শুনছি
-তুই জানিস অবিকে ফুপি পেয়েছেন বিয়ের ১৪ বছর পর।অনেক চিকিৎসা। অনেক কিছু।অনেক বেশি শেষ হয়ে যাবার পর অবির ফুটফুটে মুখ। ফুপির একমাত্র অবি… কীভাবে হয়,বল!
:এরকমই হয়।নিয়ম ও নিয়তি ঠিক যেন এরকম!
-তুই দাঁড়িয়ে থাকছিস কীভাবে! আমি যে শূন্যে ভেসে আছি, পায়ের নিচে আমার মাটি নেই।
:সমগ্র এ ভূখন্ডের নিচেও মাটি নেই
-ওসব ভূখন্ড করে টরে কী হবে বল!
:ভূখন্ড করে করেই তো হয় যেভাবে ৮৭ তে হয়েছিলো,
হয়েছিলো একাত্তরে।
-মান্তু, ওসব এখন আর হবে না হচ্ছে না।
:Time will say. Wait and watch.
-স্বপ্নবাদীতা বড্ড disgusting!
আজ অনেকটা বছর হয়ে গেলো। অবির  লাশের সামনে ফুপি মুর্ছা গিয়েছিলেন।সেন্স ফিরে ৩৯ মিনিটের মাথায় স্ট্রোক। দ্বিতীয় লাশ।ফুপা লন্ডনের সড়কে পাগল হয়ে ঘুরছেন।সুজয়া টেক্সাস  থেকে ডালাস,ডালাস থেকে টরোন্টো – জীবন জেরবার করেও  ভুলতে পারছে না অবিকে হারাবার তীব্রতম হাহাকার।
২০২২ সালের একটি বিকেল।খুব শীত।আমি দাঁড়িয়ে আছি একটি হাসপাতালের সামনে।সুরম্য অট্টালিকায় গাঁথা হাসাতালটি আধা নাকি পুরো আমার জানা নেই।শুধু কোনো এক মান্তু,কেবলি জেনে নেয়- দিকভ্রান্ত এ
এই ভুখন্ডে মানুষের জীবন কোয়ার্টারের নিচে অথবা
তৃতীয় কোনো লাশ।

ফোকাস মোহনা.কম