রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে মন খারাপের পরাজয়

ইংল্যান্ডের কাছে সর্বশেষ ম্যাচটি হারের পর নাসুম আহমেদ বলেছিলেন, আমাদের দিয়ে হচ্ছে না’! আসরের রেকর্ড দুই বারের চ্যাম্পিয়ন উইন্ডিজ এবার নড়বড়ে দল। বাংলাদেশের মতোই প্রথম দুই ম্যাচ হেরেছে।

সেই উইন্ডিজকে বাগে পেয়েও হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। এই উইন্ডিজের বিপক্ষেই ২০০৭ বিশ্বকাপের মূলপর্বের জয়টা এতদিন ছিল একমাত্র। আজ জয়ের সুবর্ণ সুযোগ থাকলেও উল্টো মাহমুদউল্লাহর বাহিনী হেরেছে ৩ রানে। তবে আজকের হারটি লড়াই করে। শেষ বলের হিসাব মেলাতে পারেনি বাংলাদেশ।

রান তাড়ায় নেমে চমক দেখায় বাংলাদেশ। পারফর্মেন্সে নয়; ব্যাটিং অর্ডারে। যে কোনো ফরম্যাট মিলিয়ে আজই প্রথমবার ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নামেন সাকিব আল হাসান। তবে ১২ বলে ৯ রানের বেশি করতে পারেননি। লিটন দাসের সঙ্গী হন তিনে নামা সৌম্য সরকার। আজই দলে সুযোগ পাওয়া সৌম্য ভালোই খেলছিলেন।

লিটনের সঙ্গে তার ৩১ রানের জুটি দাঁড়িয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আকিল হোসেনর বলে ক্রিস গেইলের তালুবন্দি হন ১৩ বলে ১৭ রান করে। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকেন লিটন দাস। তার সঙ্গী হয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মুশফিক। সেই স্কুপ করতে গিয়ে ৬ বলে ১ চারে ৮ রানে বোল্ড হয়ে যান রামপালের বলে।

বিপর্যয়ে পড়া দলের ভার চাপে লিটন আর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর কাঁধে। শেষ ৬ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৫০ রানের। লিটন-রিয়াদ ধৈর্য্য নিয়েই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ২২ রান। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে ব্র্যাভোকে ছক্কা মেরে ব্যবধান কমান লিটন। সেই ওভারের শেষ বলে হোল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ৪৩ বলে ৪৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস। উইকেটে আসেন আফিফ হোসেন (২*)।

শেষ ওভারে দরকার হয় ১৩ রান। বোলার আন্দ্রে রাসেল। প্রথম দুই বলে আসে তিন রান। তৃতীয় বলে ২ রান নেন মাহমুদউল্লাহ। পরের বলে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান অধিনায়ক। আসে আরও ২ রান। পঞ্চম বলে মিসফিল্ডিং থেকে ২ রান। শেষ বলে প্রয়োজন হয় সেই ৪ রানের। কিন্তু সেই হিসাব মেলাতে পারেনি বাংলাদেশ। ৩ রানের রুদ্ধশ্বাস জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৪ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। উইন্ডিজের পাঁচ বোলার ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪২ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টস জয়ী বাংলাদেশ শুরুতে চেপে ধরেছিল ক্যারিবীয়দের। পরে রোস্টন চেজের ৪৬ বলে ৩৯ আর নিকোলাস পুরানের ২২ বলে ৪০ রানের ঝড়ে তারা ম্যাচে ফিরে। পঞ্চম উইকেট জুটিতে আসে ৫৭ রানা। মেহেদি আর তাসকিনকে দিয়ে বোলিং শুরু করে বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারেই আনা হয় মুস্তাফিজকে। শেষ বলে আসে সাফল্য। মুস্তাফিজের বলটি উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগে মুশফিকুর রহিমের তালুবন্দি হন ৯ বলে ৬ রান করা এভিন লুইস।

দলীয় ১২ রানে প্রথম উইকেট হারায় উইন্ডিজ। ‘ক্যারিবীয় দানব’ খ্যাত ক্রিস গেইল আজও ধুঁকছিলেন। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে ১০ বলে ৪ রান করা গেইলকে বোল্ড করে দেন শেখ মেহেদি। উড়ে যায় মিডলস্টাম্প।

৭ম ওভারের চতুর্থ বলটি স্ট্রেইট ড্রাইভে ওড়াতে চেয়েছিলেন হেটমায়ার (৯)। কিন্তু টাইমিং না হওয়ায় সেটা সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হয়। পোলার্ড ১৪*, রাসেল (০, রান-আউট), ব্র্যাভো (১) আর জেসন হোল্ডার করেন ৫ বলে অপরাজিত ১৫* রান। ২টি করে উইকেট নেন মেহেই, মুস্তাফিজ আর শরীফুল। সাকিব-তাসকিন ছিলেন উইকেট শূন্য।

ফম/এমএমএ/

স্পোর্টস ডেস্ক | ফোকাস মোহনা.কম