চাঁদপুর : চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের মনিহার গ্রামে জমির শ্রেণি পরিবর্তন না করে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ফসলি জমি ভ্যাকু দিয়ে মাটি কেটে দীঘি তৈরী করা হচ্ছে। যার ফলে ওইসব জমির পাশের ফসলি জমির মালিক ক্ষতির সম্মুখিন হবেন বলে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিন মনিহার গ্রামের হাজী সাহেবের বাড়ীর সামনে সড়কের পাশে ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুর তৈরীর করার সত্যতা মিলেছে।
ওই স্থানে একাধিক জমিতে একই সাথে ভ্যাকু দিয়ে মাটি কাটা চলমান। তবে ওই সময় ভ্যাকুটি মাটি কাটা থেকে বিরত অবস্থায় পাওয়াগেছে। দুটি জমির পাশে পাওয়াগেছে “কাজী আব্দুল গফুর এবং সুফিয়া বেগম ফাউন্ডেশন” এর নিজস্ব সম্পতি সাইনবোর্ড লাগানো।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, কাজী আব্দুল গফুরের ছেলেরাই ফাউন্ডেশনের নামে এই দীঘি কাটাচ্ছেন। তবে তারা এই দীঘি কাটার পূর্বে স্থানীয় লোকজনের সাথে কিংবা পাশের জমির মালিকদের সাথে কোন ধরণের পরামর্শ কিংবা কথা বলেননি।
ক্ষতির সম্মুখীন জমির মালিকদের মধ্যে মনিহার গ্রামের আনোয়ার উল্যাহ, আবিদ আলি ও মো. শাহাজালাল বলেন, কাজী আব্দুল গফুর এর ছেলে হাবিবুর রহমান, ঠিকাদার আলম স্থানীয়ভাবে তাদের অর্থ-সম্পত্তির প্রভাব খাটিয়ে নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে ফসলি জমির ক্ষতি করছে। তাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি ছাড়াও পাশের লোকদের সাথে এজবদল করে কয়েক একর জমি দীঘি করার জন্য মাটি কাটা শুরু করেছে। তাদের এই দীঘি কাটা হলে আমাদের বড় ধরণের ক্ষতি হবে এবং এই এলাকায় ফসল উৎপাদনে বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে পড়বে।
তারা আরো বলেন, আলম গংদের প্রভাবের কারণে এলাকার অনেক লোকই তাদের এই ধরনের বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না। তারা প্রশাসনকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। যে কারণে আমরা আমাদের ক্ষতির বিবরণ উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), জেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেরা কৃষি কর্মকর্তা ও সদর মডেল থানার ওসি বরাবর দরখাস্ত করেছি। আমরা এই বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
এই বিষয়ে ফাউন্ডেশনের সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, এখানে মাদ্রাসা হবে এবং মসজিদ পরিচালনার জন্য এই দীঘি কাটা হচ্ছে। আমরা মনে করি কারো ফসলের ক্ষতি হবে না। কেউ কেউ আমাদের ভালো কাজের বিরোধীতা করছে। তবে আমাদের জমি শ্রেণি যেহেতু নাল, এটি দীঘি করার পূর্বে প্রশাসনের অনুমোদন নেয়া প্রয়োজন ছিলো। অনুমতি না নেয়ার কারণে এই বাধা আসছে। তবে আমরা অনুমতি নিয়ে কাজ করবো।
চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল-ইমরান খাঁন বলেন, যে কোন ব্যাক্তি তার জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে হলে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট আবেদন করতে হবে। আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত হবে এবং তারপর ওই শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়টি জনহিতকর হলে আবেদন মঞ্জুর হবে। এই ধরণের শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য একাধিকবার তদন্ত করারও প্রয়োজন হয়।
ফম/এমএমএ/