রাতের বেলায় বাল্কহেড চলতে দেয়া হবে না: ডিজি কমডোর জালাল

চাঁদপুর: বাংলাদেশ নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন বলেছেন, নৌপথ নিরাপদ রাখার জন্য সরকারের যে সিদ্ধান্ত রাতের বেলায় বাল্কহেড চলতে দেয়া হবে না। এই সিদ্ধান্তেই ঠিক থাকবে এবং কোনরকম পরিবর্তন হবে না। নৌযান সংশ্লিষ্টরা দক্ষতা অর্জন ও দায়িত্ববান হলে অব্যশই নৌদুর্ঘটনা কমে আসবে।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশনে চাঁদপুর আঞ্চলিক নৌযান সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন পরিদর্শন অফিসের আয়োজনে নৌযানের সুকানী ও গ্রীজারদের প্রশিক্ষণ  এবং পরীক্ষা গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, নৌ যানের মালিকরা সব সময় কম বেতন দিয়ে কাজ করার জন্য অশিক্ষিত ও অদক্ষ লোকদের নিয়ে জাহাজ পরিচালনা করছেন। যার ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। আমরা এখন থেকে শিক্ষিতদের এসব প্রশিক্ষণে অগ্রাধিকার দিয়ে এগিয়ে নিয়ে আসব।

জালাল উদ্দিন বলেন, দক্ষ ও শিক্ষিত নাবিকদের চাহিদা দেশ এবং বিদেশে সমানভাবে চাহিদা রয়েছে। তাদের পারিশ্রমিক অনেক সম্মানজনক। চাঁদপুর বন্দর ও মেঘনা উপকূলীয় এলাকায় হিসেবে এখানকার লোকজন জন্মলগ্ন থেকেই নাবিক। তাদের সাহস অনেক বেশী। শুধুমাত্র সঠিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। চাঁদপুর নৌ সীমানা দেশ ও বিদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই রুটে ঝুঁকিও রয়েছে। অনেক দুর্ঘটনা সম্পর্কে আপনাদের জানা আছে এবং আমি নিজেও জানি।

বালুবাহী বাল্কহেড মালিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা একেকজন ২ থেকে ৩ কোটি টাকা খরচ করে বালুবাহী বাল্কহেড তৈরী করেছেন। আপনাদের কেউ এই কাজে আসতে বলেনি। আপনারা নিজেদের স্বার্থের জন্য এসেছেন এবং বিনিয়োগ করেছেন। বালক্টহেড কোন জাহাজের মধ্যে পড়ে না। বাল্কডেহ তৈরীর সময় ডিজাইন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি ও অনুমোদন নেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। এখন যখন আইনের আওতায় আসা এবং জরিমানা করা শুরু হয়েছে তখন আপনারা নিবন্ধনের জন্য চেষ্টা করছেন। আপনারা যেহেতু প্রথমেই অপরাধ করেছেন, তখন সময়ত একটু লাগবে। যাদের কাগজপত্র সঠিক নাই তাদের জরিমানা হবে। আমরা চাচ্ছি নৌ পথে সার্বিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য। এই জন্য আমাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে।

মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের সাফল্য অনেক। দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে আমরা এখন গর্ববোধ করি। সরকার শিক্ষার প্রতি অনেক গুরুত্ব দিয়েছে। নৌপরিবহন ক্ষেত্রেও শিক্ষিতদের এগিয়ে আসতে হবে। আপনাদের যে কোন সমস্যা আমাদেরকে জানাবেন। আমাদের ওয়েব সাইটে অভিযোগ করার ব্যবস্থা আছে। কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়, আমরা সকলেই আইনের আওতায়।

নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের চীফ ইঞ্জিনিয়ার এন্ড শিপ সার্ভেয়ার মো. মনজুরুল কবিরের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মূখ্য পরিদর্শক মো. শফিকুর রহমান।

চাঁদপুর আঞ্চলিক নৌযান সার্ভে ও নিবন্ধন অফিসের পরিদর্শক মো. মিলন মোল্লার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ার এন্ড শিপ বিভাগ চাঁদপুরের প্রকৌশলী এবং প্রশিক্ষক নাছিমুল হক ফকির, কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার মো. মাশহাদ, নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্জলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন শিকদার, চাঁদপুর বালুবাহী নৌযান  মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি আব্দুর রব ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন ভূঁইয়া প্রমূখ।

প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষায় চাঁদপুর অঞ্চলের ১২২জন সুকানী ও গ্রীজার অংশগ্রহন করেন।

ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম