কচুয়া (চাঁদপুর): বাংলাদেশের উদীয়মান উদ্যোক্তা জগতে একটি উজ্জ্বল নাম মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, যিনি আস্থা গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে কাজ করছেন। ১৬ বছরের কর্মজীবনে তিনি বহু সাফল্য অর্জন করেছেন, যার মধ্যে ১৩ বছর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিতে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন এবং অনেক উদ্ভাবনী উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ততা উল্লেখ যোগ্য। বর্তমানে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গ্লোবাল এন্টার প্রেনিউরশিপ বুটক্যাম্পের (এঊই) বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন, যা আন্তর্জাতিক ভাবে উদ্যোক্তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। এই উদ্যোক্তার সফলতা গল্প বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম টেলিভিশন ও পত্র পত্রিকায় তুলে ধরেন।
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার মনপুরা গ্রামের কৃতি সন্তান। তার বাবা মরহুম হাজী আব্দুল মান্নান ছিলেন একজন শিক্ষক। মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ৫ ভাই ৩বোনের মধ্যে সবার ছোট, পারিবারিক ভাবে তাঁরা সবাই সু-শিক্ষিত। তিনি ব্যবসা ও কর্মের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িয়ে এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছেন।
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ কর্মজীবন শুরু করেন ডেটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেডে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। পরবর্তীতে তিনি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে কাজ করার সময় ফিনটেক, অডিটিং, এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেন। ২০২৩ সালে তিনি আস্থা গ্রুপের সিইও হিসেবে যোগ দেন, যেখানে তিনি কর্পোরেট সেক্টরে নতুন স্টার্টআপ লঞ্চ এবং কৌশলগত পরিচালনায় নেতৃত্ব প্রদান করছেন।
তাঁর নেতৃত্বে আস্থা গ্রুপ একটি শক্তিশালী উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিকশিত হয়েছে, যা প্রযুক্তি ও সেবামূলক খাতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক ভাবে সাফল্য অর্জন করছে। আস্থা গ্রুপের নেতৃত্বে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ কেবল ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জনেই থেমে নেই; তিনি তাঁর উদ্যোগের মাধ্যমে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নেও অবদান রাখতে চান। তরুণ উদ্যোক্তাদেরকে দিকনির্দেশনা ও সমর্থন প্রদান করে দেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে আস্থা গ্রুপের বিভিন্ন সামাজিক ও বাণিজ্যিক প্রকল্প বাংলাদেশের উন্নয়নে সরাসরি অবদান রাখছে। মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি আদর্শ ব্যক্তিত্ব। তাঁর সফল উদ্যোগগুলো তরুণদের মধ্যে উদ্ভাবনী চিন্তাধারা জাগ্রত করতে সহায়ক হয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ‘ট্যাবেজ’ নামে একটি ফিনটেক স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা, যা মাস্টারকার্ড দ্বারা যাচাইকৃত এবং ওয়াই কম্বিনেটরের সমর্থিত। এ ছাড়াও,তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাংলাদেশে ১৫টিরও বেশি সফল স্টার্টআপ প্রকল্প বান্তবায়ন নেতৃত্ব দিয়েছেন।
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, তরুণদের মধ্যে সুপ্ত শক্তি এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতা রয়েছে যা সঠিক নির্দেশনা পেলে অসাধারণ সফলতা আনতে পারে।
তিনি বলেন, “তরুণদের স্বপ্ন দেখাতে এবং সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পাশে থেকে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার কাছে সবচেয়ে আনন্দদায়ক।” তাঁর উদ্যোগে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে তিনি নতুন উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা ও দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন।
তিনি আরো বলেন, সফল হতে হলে প্রথমে দরকার সততা। তারপর সঠিক লক্ষ এবং তা বাস্তবায়ন করার স্পৃহা ও কঠোর পরিশ্রম। যদি কেউ সুশিক্ষিত হয় এবং লক্ষ ঠিক করতে পারে তাহলে অবশ্যই সে সফল হবে। পরিশ্রম অবশ্যই সফলতা এনে দেবে।
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ফিনটেক এবং তথ্য নিরাপত্তার উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং তিনি আন্তর্জাতিক মানের তথ্য সিস্টেম অডিটিং (ঈওঝঅ) এবং সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে স্বীকৃত। এর পাশাপাশি, তিনি ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ওপরেও গভীর জ্ঞানার্জন করেছেন এবং এর বিভিন্ন শাখায় সফলভাবে কাজ করে চলেছেন।
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইটি-তে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তাঁর একাডেমিক জীবন জুড়ে তিনি মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং এই অর্জন তাঁর পরবর্তী কর্মজীবনে বিশাল প্রভাব ফেলেছে।
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ শুধুমাত্র প্রযুক্তি ও ফিনটেকেই সীমাবদ্ধ নন, তিনি ভূরাজনৈতিক বিষয়গুলোতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোতে তিনি নিয়মিতভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং তাঁর প্রবন্ধগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপস্থাপিত হয়, যেখানে তিনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও অর্থনীতি সম্পর্কিত নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেন।
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ কেবল একজন উদ্যোক্তা নন, তিনি সমাজসেবামূলক কাজেও গভীরভাবে জড়িত। তাঁর নেতৃত্বে ‘আস্থা ইনিশিয়েটিভ ফর ম্যানকাইন্ড’ নামে একটি সামাজিক উদ্যোগ পরিচালিত হচ্ছে, যা সমাজের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে।
তাঁর অনুবাদ করা মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধান মন্ত্রী ড.আনোয়ার ইব্রাহিমের ‘দ্য এশিয়ান রেনেসাঁ’ বইটি বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে, যা সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চিন্তাধারার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ একজন উদ্যমী ও দূরদর্শী উদ্যোক্তা, যিনি তাঁর নেতৃত্ব এবং সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে দেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। তরুণ প্রজন্মকে উদ্ভাবনী পথে পরিচালিত করে, তাঁদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী বিকশিত করতে তিনি নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন।
ফম/এমএমএ/