চাঁদপুর : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর পাড়ে মোহনপুর পর্যটন লিমিটের এর বীচ মেঘনা নদীতে সাঁতার কাটতে গিয়ে পানিতে ডুবে শাহরিয়ার ইশতিয়াক শামস (১৬) নামে ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। শামস পানিতে ডুবে গেলে তার সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। একই সময় ঘুরতে আসা সুসমিত সাহা (১৬) নামে আরো নিখোঁজ হয়। প্রায় ৬ঘন্টা উদ্ধারের চেষ্টার পরও তার খোঁজ মিলেনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে আসলে এ ঘটনা ঘটে।
সংবাদ পেয়ে মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর নৌ পুলিশ স্টেশন ও চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ডুবুরি দলের লিডার প্রণব বড়ুয়ার নেতৃত্বে সোহেল মিয়া ও হাসিবুর রহমান সহকারী ডুবরিরা মেঘনা নদীর ঘটনাস্থলে নিখোঁজ ছাত্রের সন্ধান করে। ঘটনার পর দীর্ঘ ৬ ঘন্টা অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ শিক্ষার্থীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ সন্ধ্যা ৭ টার সময় অভিযান স্থাগিত করে ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন মতল উত্তর উপজেলার মোহনপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক বাবুল পাল। তিনি বলেন, দুপুরে অনেক লোকজন ঘুরতে আসে মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে। পর্যটন কেন্দ্রের পাশেই মেঘনা নদীতে সাঁতার দেয়ার জন্য একটি জোন তৈরী করেছে কর্তৃপক্ষ। সেখানে অনেক শিশু-কিশোর পানিতে নেমেছে। এর মধ্যে ২ জন পানিতে তলিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন ১ জনকে উদ্ধার করতে পারলেও সুসমিত সাহাকে উদ্ধার করতে পারেনি।
স্থানীয় জানান, ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে বেড়াতে এসে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এর আগেও ঢাকা ডেমরা থেকে পরিবারের সাথে ঘুরতে আসা এক শিশু একই স্থানে ডুবে মৃত্যু হয়।+
আরও পড়ুন>>পিকনিকে এসে মেঘনায় ডুবে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, নিখোঁজ ১
মোহনপুর পর্যটন লিঃ এর বীচ সিকিউরিটি ম্যানেজার সাদেকুর রহমান জানান, আমরা সবসময়ই সতর্ক করে থাকি। সাঁতার না জানলে নদীতে নামতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আজকেও তাদেরকে হ্যান্ডমাইক দিয়ে নদীতে নামার জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সতর্ক করা হয়। কিন্তু তারা সিকিউরিটি গার্ডদের সাথে দুব্যর্বহার করে নদীতে নেমেছে। তবে সামনে দিয়ে যাতে এধরণের দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে জোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ক্যাব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজের সমন্বয়কারী আনিছুর রহমান আনিছ বলেন, আমরা ছাত্রদেরকে পানিতে নামতে নিষেধ করেছি। চারদিন আগে থেকেই তাদেরকে বলা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ঘটনাটি ঘটে গেল। আমরা খুবই দুঃখিত। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নিব কি না তা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক সাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। নিখোঁজ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়েছি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।
এদিকে নিহত ও নিখোঁজ ছাত্রের অভিভাবক ও স্বজনেরা ঘটনাস্থলে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা দ্রুত নিখোঁজ সুসমিত সাহাকে উদ্ধারের দাবী জানান।
ফম/এমএমএ/আরাফাত/