
মতলব উত্তর (চাঁদপুর): গত ১৬ মার্চ চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন অটোরিক্সা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী মিজানুর রহমান। নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই প্রধান।
ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত একজন ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন ৮ জনসহ মোট ৯ জন। কিন্তু সব প্রার্থী ভরাডুবি হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী মিজানুর রহমানের কাছে। তিনি ৫ হাজার ২২ ভোট পেয়ে জয়ের মালা পড়েন। আর আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার ৮০৮ ভোট।
সম্প্রতি সময় থেকে মতলবে শুরু হয়েছে গ্রুপিংয়ের রাজনীতি। যার ফলশ্রুতিতে নৌকার এই ভরাডুবি নিয়ে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে মতলব উত্তর উপজেলার নেতাকর্মীরা একেক জন একেকভাবে দেখছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে কাঁদা ছোড়াছুড়ি। দলের সিনিয়র নেতাদেরও কেউ কেউ দোষারোপ করে বিভিন্নধরনের লেখা পোস্ট করেছেন। আবার কেউ নির্বাচনী ভুলগুলোও তুলে ধরেছেন। তবে দোষারোপের পোস্ট বেশি লক্ষ্য করা গেছে নেতাকর্মীদের ফেসবুক আইডিতে।
এমএ মানিক নামে একজন লিখেছেন, ‘বর্তমান প্রতিমন্ত্রীর সাথে, সাবেক মন্ত্রী পরাজিত’। এমডি সাইফুল ইসলাম নামে এক আইডিতে লিখেছেন, ‘মোহনপুর ইউনিয়ন থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত নেতা গো ক্ষমতা দিয়ে কখনো কোন কিছু হয় না জনগণের ভালোবাসাই আসল ভালোবাসা’। স্বপন বিপি নামে আরেকটি আইডিতে লিখেছেন ‘সাবেক দুই দুই বারের মন্ত্রীর কেন্দ্রে নৌকার ভরাডুবি কেন? মতলব বাসি জানতে চায় [বিঃদ্রঃ নৌকা = ৩৬৪ অটোরিক্সা = ১১৪০]’। মতলবের টাইগার নামে একটি আইডিতে লিখা হয়েছে ‘খাইছেন টাকা নৌকার পরাজয় তো হবেই’। মোহাম্মদ ইয়ার হোসেন লিখেছেন, ‘অনেক মাথা চুলকাইয়াও রাজা বাঁচাই তে পারলেন না তাই আগামি দিনে আর কারো সাথে খেলায় নাইমেন না। ft মোহনপুর ইউনিয়ন’। এমডি লিটন লিখেছেন ‘২০১৬ সালে ফরাজিকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা ডুবিয়ে যারা এই নোংরা খেলা শুরু করেছিল। তারাই আজ মহনপুর ইউনিয়নের নৌকা ডুবিয়েছে। এদেরকে মতলবের মানুষ ভাল ভাবেই চিনে’। আবার কেউ কেউ লিখেছেন সিনিয়র নেতাদের গ্রুপিংয়ের রাজনীতির কারণে নৌকার পরাজয়। আবার কেউ লিখেছেন নির্বাচনের আগের দিন সাত স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বসিয়ে দেওয়ার কারণে নৌকা হেরেছে।
এভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী নেতাকর্মীরা দলের সিনিয়র নেতাদের দোষারোপ করে পোস্ট দিচ্ছেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সচেতন কয়েকজন নেতা বলেন, নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ নৌকার পক্ষে প্রচারণা করেছেন। কিন্তু আমরা তাকে নির্বাচিত করতে পারি নাই এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। তার মধ্যে আবার ফেসবুকে যারা এধরণের কথা বার্তা লিখে তারা আসলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চাইছে। এটা আমাদের কাম্য নয়।
ফম/এমএমএ/আরাফাত/