
প্রতিকী ছবি।
—যুবক অনার্য
রাত বেড়ে যায়–প্রতিদিন মেয়েটির বাসায় ফিরতে অনিচ্ছাকৃত দেরি হয়ে যায়।মেয়ে বোলেই
রাত করে বাসায় ফেরা দোষ আর ছেলে হলে
দশ খুন মাফ! মেয়েটাই বাড়ির একমাত্র
আর্নিং মেম্বার। বুড়ো বাবা মা, ছোটো বোনটা কলেজে পড়ে। সংসারটা কায়ক্লেশে টেনে নিয়ে যেতে তার চেষ্টার ত্রুটি নেই।এদিকে অফিসের বসটাও সুবিধের নয়, কেমন কেমন করে যেনো তাকায়, যদিও এখন পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো ইংগিত দিতে সাহস পায়নি কিন্তু পেতে কতক্ষণ! ওরকম কিছু হলে চাকরিটাই হাত ছাড়া হয়ে যাবে মানে ছেড়ে দিতে হবে- এসব কথা কারো সংগে
শেয়ার করবে এমন কেউও তার নেই। একটা ছেলে প্রোপোজ করেছিলো। ছেলেটি ভালো কিন্তু সংসারের ঘাণি তার মাথায় বোলে ওসব আর সম্ভব হয়ে ওঠে নি।এখন সে প্রায়শ একা ফিল করে বড্ড একাকী দম বন্ধ করা নিঃসঙ্গতা! আহা এই নিঃসংগতা থেকে কবে মুক্তি পাবে সে? তবে কি মেয়ে হয়ে জন্ম নেয়াই পাপ! ওর মতো লক্ষ লক্ষ মেয়ের অবস্থা একই রকম।রাষ্ট্র এদের দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ।দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিদেরও কোনো মাথা ব্যথা নেই।তাহলে আলটিমেট উপায়টা কি?অসৎ উপায় অবলম্বন করা? না এটা তার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়,তারচে বরং মরে যাওয়া ভালো।আসলে,সত্যিকার অর্থে কোনো উপায় নেই।দেশে আজ হাজার হাজার মানুষ চাকুরিচ্যুত।বাড়ছে চুরি ডাকাতি ছিন্তাই,এর মধ্যে আবার ধর্ষনেরও বিরাম নেই! দীর্ঘশ্বাস ফেলে মেয়েটি অফিস থেকে ফেরার পথে সম্প্রতি একটি কথাই ভাবে : ঈশ্বর বোলে যদি কেউ থেকে থাকেন, মেয়েটি প্রশ্ন করতো: স্রষ্টা, আমার অপরাধটা কি? অপরাধ কি এটাই যে আমার দুটি চাঁদ আর একটি ঝিনুক আছে- এটাই কি আমার অপরাধ? এটা কি কখনো অপরাধ হতে পারে।অথচ এই তিনটি শ্রেষ্ঠ সুন্দরতা আর মাদকতার জন্যই মেয়েদের কখনো মানুষ ভাবা হলো না।উত্তর না পেয়ে মেয়েটি শেষ প্রশ্নটি ছুঁড়ে দেয় বাঘের মুখে অসহায় হরিণের মতো:হে স্রষ্টা হে প্রকৃতি, তুমিও কি আমায় নারী ভাবো নাকি মানুষ প্রজাতির কেউ!