মেঘনার পানি বৃদ্ধি, চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে

পুরান বাজার শহর রক্ষা বাধ পরিদর্শনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ চেম্বার নেতবৃন্দ।

চাঁদপুর : দেশের বিভিন্ন স্থানের নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে চাঁদপুরেও ব্যাপক ভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর পানি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে শহরের নিন্মঅঞ্চল গুলো প্লাবিত হচ্ছে। এ পানি বৃদ্ধির ফলে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাধেঁর গুরুত্বপূর্ন স্থান এখন মারাত্বক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শহরবাসীর মধ্যে মারাত্মক আতংকে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।

সরেজমিন ও খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, পদ্মা মেঘনা ও ডাকাতিয়া মিলনস্থল নদীর শহর রক্ষা বাধঁ এলাকায় তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এখন যে স্থান দিয়ে নৌপথে লঞ্চ চলাচল করে সে নদীপথ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। সতর্কতার সাথে নৌযানগুলো চলাচল করতে বিআইডব্লিউ টিআইয়ের পক্ষ থেকে সর্তক করা হয়েছে। এদিকে পানি বাড়ার সাথে সাথে শহর রক্ষা বাধেঁর প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র পুুরান বাজার এলাকায় অনেকস্থানে ব্লক হঠাৎ-হঠাৎ দেবে যাচ্ছে।

শনিবার (১৮ জুন) স্থানীর চেম্বার অব কমার্সের কর্মকর্তারা বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে তাৎক্ষনিক পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা দুপুরে শহররক্ষা বাধেঁর পুরানবাজার অংশে নতুনবাজার অংশের অধিকাংশ স্থানটি পরিদর্শন করেন এবং ব্লক দেবে যাওয়া স্থানে বালিভর্তি বস্তা ও ব্লক ফেলা শুরু করেছেন।

চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের কর্মকর্তা গোপাল সাহা জানান, পুরান বাজারে প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্রের বাধঁ এলাকার মন্দিরের সামনের স্থানের অনেকাংশে ব্লক দেবে গেছে। যা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। তা আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করলে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তারা এসে সংস্কারমূলক কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আশা করছি তাঁরা এ বিষয়ে আরো সতর্ক অবস্থানে থাকবেন।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাধেঁর পুরানবাজারের ব্লক ঢেবে যাওয়া ঘটনাস্থল ও নতুনবাজার বাজারের মোলহেড ও টিলাবাড়ি এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি জানান, স্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পেলে বাধঁ ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। তবে আমরা সতর্ক রয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা বাঁেধর নতুনবাজার ও পুরান বাজার এলাকা ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষাকল্পে একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেছি। খবর শুনে আমরা এসে এখন স্থানটি চিহ্নিত করে সার্ভে শুরু করেছি ও বালিভর্তি জিইও টেক্যটাইল ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছি। পাশাপাশি ব্লক ডাম্পিং এর কাজও চলছে। আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৩ হাজার বালি ভর্তি বস্তা, ১৩ হাজার সিসি ব্লক আমাদের মজুদ রাখা আছে।

এদিকে, চাঁদপুর-ঢাকা ও বরিশাল-চাঁদপুর-ঢাকা যাত্রীবাহী লঞ্চসহ বিভিন্ন রুটের নৌযানগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সাথে চলাচল করছে। মেঘনা ও পদ্মায় পানি বাড়ার সাথে সাথে স্রোতের তীব্রতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীতে জোয়ারে পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে চাঁদপুরের সকল মৎস্য চাষীদের বন্যার আগাম সতর্ক সংকেত দেয়া হয়েছে। সদর উপজেলার উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মৎস্যচাষীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বন্যার পানিতে পুকুর প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই নেট দিয়ে ঘিরে রাখার আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। দেশের অন্যান্য জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবস্থার আলোকে আমাদেরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম