মা মাদ্রাসা বন্ধ দেছে, বসে না থাহে জাহাজে যাই, টাকা হবে

জাহাজের হত্যার শিকার কিশোর মাজেদুলের বাবার আহাজারি। ইনসেটে মাজেদুল।

চাঁদপুর: চাঁদপুরের হাইমচর মেঘনায় জাহাজে হতাহতের ঘটনায় নিহত সাতজনের মধ্যে দুজন মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার। তাঁরা হলেন-সজিবুল মুন্সি (২২) ও মাজেদুল ইসলাম (১৬) রয়েছেন। দুজনই তিন-দুদিন সপ্তাহ আগে কাজে যোগ দিয়েছিলেন।

মাজেদুল ইসলাম চর যশোবন্তপুর গ্রামের আনিচুর রহমানের ছেলে। আনিচুর রহমান পেশায় রিকশাচালক। ঝামা বরকাতুল উলুম ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। পরিবারের অভাবের কারণে মাত্র ১১ দিন আগে জাহাজে লস্করের চাকরিতে যোগ দেয়। কিন্তু চাকরির নয় দিনের মাথায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটল।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ছেলে মাজেদুল ইসলামের মরদেহ গ্রহণ করতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা আনিচুর রহমান।

নিহত দুজনের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের সমবেদনা জানাতে তাঁদের আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসছেন বাড়িতে।

মাজেদুল ইসলামের বাবা আনিচুর রহমান বলেন, আমার মনি মাদ্রাসায় নাইনে পড়ত। এলাকার একজনের কথায় জাহাজে চাকরিতে পাঠাতে রাজি হয়। এখন তো আমার মনিকে হারিয়ে ফেললাম।

মাজেদুল ইসলামের মা মুক্তি বেগম বলেন, মাজেদুল কইছিল মা, মাদ্রাসা বন্ধ দেছে। এই বন্ধের সময় বসে না থাহে জাহাজে যাই। কিছু টাকা হবে। আমার মনি ওই যে গিলো, আর আলো না। ফোন দিছি বন্ধ কয়। আমার ছেলেরে হত্যার বিচার চাই।

মাজেদুলের মামা ইমানুর সিকদার বলেন, ভাগিনার খুনের ঘটনা শুনার পর থেকে পুরো পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। সংবাদ পেয়ে আমরা বাড়ি থেকে চলে আসি। এই ধরণের মর্মান্তিক হত্যাকান্ড আমার দেখা প্রথম। এই ঘটনায় প্রত্যেকটি হত্যাকান্ডের সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবী করছি।

ফম/এমএমএ/

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম