মাতৃকালীন ভাতা আত্মসাৎ করে অস্বীকার করছেন এক মহিলা মেম্বার

মতলব উত্তর (চাঁদপুর): রক্ষক যদি হয় ভক্ষক তখনই নিরাপত্তা বা বিশ্বস্ততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমনই একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে এক মহিলা ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার তাছলিমা আক্তারের এক অসহায় নারী মাতৃকালীন ভাতা আত্মসাৎ করার পর এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি ওই অসহায় নারী পলি আক্তার কোন উপায়ন্তর না পেয়ে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।

পলি আক্তার বলেন, গত বছর আমি মাতৃত্বকালী ভাতা পাওয়ার জন্য মহিলা মেম্বার তাছলিমা আক্তারের কাছে কাগজপত্র, ছবি ও মোবাইল ন¤^র (বিকাশ) জমা দিয়েছি। কিন্তু আমার মোবাইল নম্বরের পরিবর্তে তিনি তার বিকাশ করা মোবাইল নম্বর জমা দিয়ে দিয়েছেন। আমি অনেক দিন অপেক্ষা করার পর তাকে জিজ্ঞেস করি আমার টাকা আসে না কেন? উত্তরে তিনি বলেন আসবে, আসবে। এরপর আরো কয়েক মাস পরে উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরে গিয়ে জানতে পারি আমার টাকা অন্য কারো মোবাইলে চলে গেছে। বিষয়টি বিভিন্নজনের কাছে গেলেও কোন সমাধান পাচ্ছি না।

এদিকে সাংবাদিকরা বিষয়টি জানার পর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে খোঁজ নেন। সেখান থেকে জানা যায়, পলি আক্তারের মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকা মহিলা মেম্বার তাছলিমা আক্তারের মোবাইলে চলে গেছেন। অনলাইন সিস্টেমের এক পরিসংখ্যানে জানা দেখা গেছে, মহিলা মেম্বার তাছলিমা আক্তারের মোবাইল নম্বর ০১৯২২০২২৬৫৬ বিকাশে গত ১৫/০৪/২০ইং তারিখে ২৪০০ টাকা গেছে। পরবর্তীতে ০১/০৬/২০ইং তারিখে ২৪০০ টাকা, ২৯/০৬২০ইং তারিখে ৪৮০০ টাকা, ২৪/১২/২০ইং তারিখে ২৪০০ টাকা, ১২/০১/২১ইং তারিখে ২৪০০ টাকা, ২১/০৪/২১ইং তারিখে ২৪০০ টাকা ও ১৭/০৬/২১ইং তারিখে ২৪০০ টাকাসহ মোট ১৯ হাজার ২০০ টাকা ঢুকেছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মহিলা ইউপি সদস্য তাছলিমা আক্তারের মুঠোফোনে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি। তার সাথে দেখা করতে চাইলেও তিনি সাংবাদিকদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি। তবে এক মাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন তার মোবাইলে টাকা আসে নাই।

এদিকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইশরাত জামান বলেন, ভাতাভোগী পলি আক্তার আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা সার্চ করে দেখেছি মহিলা মেম্বারের মোবাইলে টাকা গেছে। মহিলা মেম্বার তাছলিমা আক্তারের সাথে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে কথা বলার তিনি অস্বীকার করতেছেন। বিষয়টি আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানাবো। ভাতাভোগীদের কাগজপত্র সংগ্রহ করার সময় মোবাইল নম্বর যাচাই করেন কি না? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই আমরা যাচাই করি। যাচাইয়ের সময় তারা অস্বীকার করে, পরে দেখা যায় এমন কিছু গড়মিল হয়ে যায়।

আরাফাত আল-আমিন | ফোকাস মোহনা.কম