মতলব সুলতানাবাদে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর লোকদের হামলায় নৌকার নির্বাচনী এজেন্টসহ আহত ৮

চাঁদপুর : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সুলতানাবাদ ইউনিয়নের আমুয়াকান্দি গ্রামে আধিপত্য বিস্তার ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় স্বতন্ত্রপ্রার্থী (ঘোড়া মার্কা) আবুবকর সিদ্দিক খোকন ও (চশমা মার্কা)’র প্রার্থী মো. জসিম উদ্দিন জমাদারের সমর্থকরা আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার নির্বাচনী চীফ এজেন্ট নূরুল ইসলামসহ ৮জনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছেন। এর মধ্যে মোহন মোল্লা নামে একজন চোখে মারাত্মক আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে আমুয়াকান্দি স্বতন্ত্রপ্রার্থী জসিম উদ্দিন এর বাড়ীর নিকটে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় মতলব উত্তর থানা পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকায় নেয়া হয়েছে।

আহতরা হলেন- মজনু বেপারী (৪৭), মোহন মোল্লা (৫০), নুরুল ইসলাম (৪৭), মনির হোসেন (৪০), রুমা বেগম (৩৫), সোলেমান (৪০), জুলহাস বেপারী (৩৫), আমিন বেপারী (২৫)।

সরেজমিন ঘটনাস্থল গিয়ে ও একাধিক আহত ব্যাক্তির সাথে কথা বলে জানাগেছে, সোমবার (২৯ নভেম্বর) দিনগত রাতে ওই এলাকায় ঘোড়া মার্কা ও চশমা মার্কার সমর্থকরা গানবাজনা করে আনন্দ উৎসব করে। সকালে নৌকার সমর্থক নুরুল ইসলাম ও সোলেমান চরপাথালিয়া বাজার করতে যায়। তারা বাজার থেকে বাড়ীতে ফেরার পথে আবু বকর, ইছা পাটওয়ারী ও জসিম উদ্দিন জমাদারের ৮-১০জন লোক তাদের গাড়ী ঠেক দেয়। এর মধ্যে জুয়েল, জসিম, মাছুম, শাহজাহান জমাদার, শুক্কুর আলী, কুদ্দুছ ও রাজীব একত্রিত হয়ে নুরুল ইসলাম ও সোলেমানকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তাদের ডাক চিৎকার শুনে মোহন মোল্লা এগিয়ে গেলে তাকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় তার চোখে মারত্মক আঘাত প্রাপ্ত হয়। মোহন মোল্লাকে বাঁচাতে গেলে তার স্ত্রী রুমা বেগমও গুরুতর আহত হন। তাদের আক্রমনাত্মক অবস্থা দেখে এলাকার কেউ এগিয়ে যেতে পারেন না। গুরুতর আহত মোহন মোল্লার অবস্থা খারাপ থেকে হামলাকারীরাই হাসপাতালে নিয়ে যায়।

আহত মজনু বেপারী ও তার ভাতিজা আমিন বেপারী বলেন, সোমবার স্বতন্ত্র নির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব বুকর সিদ্দিক ও ইছা পাটওয়ারীর লোকজন নিয়ে মাতার কবর জিয়ারতের কথা বলে এলাকায় মোহড়া দেয়। এরপর তারা ইউনিয়ন পরিষদে লাথি মেরে বলে এখানে গরুর খামার করা হবে। এখানে কোন চেয়ারম্যানী বৈঠক হতে পারবে না। এরপর থেকে তারা পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটায়। হামলার ঘটনায় নুরুল ইসলাম, সোলেমান ও মোহন মোল্লাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে নৌকার সমর্থক কমপক্ষে ৮-১০জন আহত হয়।

চশমা মার্কার প্রার্থী জসিম উদ্দিন জমাদারের বাড়ীতে গিয়ে বক্তব্যের জন্য কাউকে পাওয়া যায়নি।

সুলতানাবাদ ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুবকর সিদ্দিক খোকন জানান, আমার বাড়ি থেকে হাবিবা ইসলাম সিফাতের বাড়ি ৩ কিলোমিটার দূরে। সংঘর্ষের ভয়ে ওই গ্রামে আমি প্রচার প্রচারনা করতেও যাইনি। আমি ফোনে খবর পেয়েছি চশমা প্রতিকের জসিম জমাদার ও নৌকা প্রতিকের হাবিবা ইসলাম সিফাতের কর্মীদের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আমার কোন হাত নেই। আমার কোন কর্মীও এই ঘটনার সাথে জড়িত নেই।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান কামাল বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ অবস্থান করে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে জসিম ও শুক্কুর আলী নামে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় কোন মামলা হয়নি। আহতদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) সুদীপ্ত রায় বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে। সুলতানাবাদ ইউনিয়নে ঘটনাটি ঘটেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে আমাদের ধারণা বিষয়টি পারিবারিক অথবা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটতে পারে।

ফম/এমএমএ/

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | ফোকাস মোহনা.কম