মতলব উত্তর (চাঁদপুর): চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মধ্য ইসলামাবাদ গ্রামে সম্পত্তিগত বিরোধের জেড় ধরে হামলার ঘটনায় একজন বৃদ্ধ গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও আরো ৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গত ২৫ জুলাই দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা কেন্দ্র করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই গ্রামের জহির উদ্দিন। এবং গত ২৯ জুলাই বিজ্ঞ চাঁদপুর আদালতে ১২ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন মৃত সাহেব আলীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৮০)।
মামলায় আসামী করা হয়, মধ্য ইসলামাবাদ গ্রামের নুরুল ইসলাম দর্জির ছেলে নাজমুল (৩৫), রাব্বানি (২৪), দুলাল দর্জির ছেলে মোঃ ফয়সাল (২৭), আবুল হোসেন দর্জির ছেলে মোঃ সাহেদ দর্জি (২৮), মোঃ ইব্রাহীম প্রধানের ছেলে সোহাগ (২৫), রেজাউল মোল্লার ছেলে শিহান (২৪), অলি উল্লাহর ছেলে সজিব (২৪), জসিম উদ্দিনের ছেলে শুভ (২০), মানিক অজির ছেলে হৃদয় (২২), বিল্লাল দর্জির ছেলে মেহেদী (২৩) ও মুসু মিয়ার ছেলে ইমরান (২৪) সহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বাদীনি মনোয়ারা বেগম বয়োবৃদ্ধ, স্বামীহারা, পুত্রবিহীন, অবলা, পর্দাশীল অসহায় ও সহজ-সরল নারী। তাকে একা পেয়ে তার সহায়-সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্য আসামীগণ অজ্ঞাত সন্ত্রাসীগণ দীর্ঘদিন যাবৎ পায়তারা করে আসতেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ জুলাই ঘটনাস্থলে বাদীনিকে একা পেয়ে ১নং আসামী নামজুল বাদীনিকে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার ব্রিড দিয়ে মাথা লক্ষ্য করে বারি মারলে বাদীনি জীবন বাঁচানোর জন্য ডান হাত দিয়া উক্ত বারি ফিরাতে গেলে ডান হাতের কবজির উপরের অংশে পরে মারাত্মক হারভাঙ্গা জখম হয়। ২নং আসামী রাব্বানি লোহার রড দিয়া বাদীনির পা লক্ষ্য করে বারি মারলে উক্ত বারি বাম পায়ের গোরালিতে লেগে মারাত্মক হারভাঙ্গা জখম হয়। ৫নং আসামী সোহাগ বাদীনিকে এলোপাথারী পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে, কাপড় চোপড় ছিড়ে বিবস্ত্র করে ফেলে। বাদীনির ডাক-চিৎকারে ১নং স্বাক্ষী নাজমা বেগম এগিয়ে আসলে ৩নং আসামী ফয়সাল লোহার রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করে বারি মারলে উক্ত বারি বাম হাত দিয়ে ফিরালে বাম হাতের বৃদ্ধাগুলে লেগে বৃদ্ধাগুলির গোরালিতে মারাত্মক হারভাঙ্গা যখম হয়। ৪নং আসামী সাহেদ হকিস্ট্রীক দিয়ে বারি মারিয়া নাজমা বেগমের বাম পায়ের গোরালি ভেঙ্গে ফেলে ৫নং আসামী সোহাগ নাজমার চুলের মুঠি ধরিয়া আছার দিয়ে মাটিতে ফেলে বুকের উপর পারা দিয়ে ধরে গলায় থাকা থাকায় ১১ গ্রাম ওজনের বর্তমান বাজার মূল্য অনুমান মুল্য ৮৬ হাজার টাকা হইবে টান দিয়ে ছিড়ে নিয়ে যায়।
৭নং আসামী সজিব ১নং স্বাক্ষী নাজমাকে এলোপাথারী পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক নীলাফুল জখম করে। এবং হত্যার উদ্দেশ্যে স্বাসরুদ্ধ করে মারার জন্য গলা চেপে ধরে ২নং স্বাক্ষী নাইম মিয়া খবর পেয়ে আসলে নাজমাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করিলে ৮নং আসামী শুভ ১নং স্বাক্ষী নাজমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে লোহার রড দিয়ে মাথা লক্ষ্য করে বারি মারিলে, উক্ত বারি মাথা পিঠের মধ্যে পরে পিঠের মেরুদন্ডে দুইপাশের হাড় ভাঙ্গা মারাত্মক জখম হয়। ৯নং আসামী হৃদয় সাক্ষী নাইমকে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড দিয়ে বারি মারলে উক্ত বারি ডান হাত দিয়া ফিরাইলে ডান হাতের কব্জিতে লেগে মারাত্মক ভাবে জখম হয়। ৮নং আসামী ২নং স্বাক্ষীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করে বারি মারলে উক্ত বারি বাম হাতের গোড়ায় পরে জয়েন্টে মারাত্মক হারভাঙ্গা জখম হয়। ১০নং আসামী ২নং স্বাক্ষীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটাইয়া মারাত্মক নীলাফুলা জখম। করে। বাদীনি ও ১/২নং স্বাক্ষীকে রক্ষা করার জন্য ৩নং স্বাক্ষী আব্দুল জলিল বেপারীর ছেলে জহিরুল ইসলাম এগিয়ে আসলে ১২নং আসামী লোহার রড দিয়ে বারি মেরে বাম পায়ের হাটুতে পরে মারাত্মক হাড়ভাঙ্গা জখম ও অনেক রক্তক্ষরণ হয়। ১নং আসামী নাজমুল ৩নং সাক্ষী জহিরুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশ্যে বারি মারলে উক্ত বারি বাম হাত দিয়ে ফেরালে বাম হাতের কনিষ্ঠ আগুলের গোড়ায় লেগে মারাত্মক জখম হয়। ১-৩নং আসামী ৩নং সাক্ষীকে এলোপাথারী পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক নীলা-ফুলা জখম হয়। বাদী ও ১-৩নং স্বাক্ষীর ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন আসায় আসামীগণ বাদী ও ১-৩নং স্বাক্ষীকে জীবনে মারতে না পেরে তারা বলে এই নিয়া বারাবারি করলে বা মামলা মোকদ্দমা করলে প্রাণে মেরে লাশ গুম করিবে বলে প্রকাশ্য হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
মারাত্মক আহত বাদী মনোয়ারা বেগম, সাক্ষী নাজমা বেগম, নাইম মিয়া ও জহিরুল ইসলামকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরমধ্যে বাদী মনোয়ারা বেগম ১নং সাক্ষী নাজমা বেগম, নাইম মিয়াকে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ ভর্তি করে চিকিৎসা করান এবং ৩নং স্বাক্ষী জহিরুল ইসলামকে মেডিফাস্ট মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।