
মতলব উত্তর (চাঁদপুর): চাঁদপুরের মতলব উত্তরে বাড়ির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হকিস্টিক দিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা করেছিল মোস্তাকিন সরকার নামের এক যুবক। সেই ঘটনায় বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঘটনার ১২ দিন পর আহত বৃদ্ধা হাসপাতালে মারা গেছেন।
হামলার ঘটনার পর থেকে এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্তরা। হামলায় নিহতের পরিবার অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ফরাজিকান্দি ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামে নাতনি ইনশানা বেগমের বিয়েতে বেড়াতে আসেন নানি মাজেদা বেগম। বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে একপক্ষের হকিস্টিকের হামলায় গুরুতর আহত হন বেশ কয়েকজন।
এদের মধ্যে মাজেদা বেগম ও তার মেয়ে নার্গিস বেগমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ ১২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বৃহস্পতিবার সেখানে মারা যান বৃদ্ধা মাজেদা বেগম। তার মৃত্যুর একদিন পার হলেও স্বজনদের কান্না এখনো থামেনি।
জানা গেছে, মূলত বসতবাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে মৃত ইউনুস সরকারের স্ত্রী ও সন্তানদের ওপর প্রতিবেশি রাজ্জাক সরকারের পরিবারের সদস্যরা এই হামলা করে। নিহতের স্বজনরা হকিস্টিক নিয়ে হামলাকারী মোস্তাকিন সরকারকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।
নিহত মাজেদা বেগমের নাতনি ঝর্না বেগম জানান, ছোট বোন ইনশানা বেগমের বিয়েতে বাড়িতে বেড়াতে আসেন তাদের নানি। ঘটনার দিন তার মা নার্গিস বেগমের ওপর মোস্তাকিন সরকার হামলা চালাতে গেলে নানি রক্ষা করতে পাশে যান। তখনই মোস্তাকিন সরকারের হাতে থাকা হকিস্টিকের আঘাতে গুরুতর আহত হন মা ও নানি।
আরেক বোন ইতি বেগম জানান, তারা ৭ বোন ও ৩ ভাই। বাবা মারা গেছেন অনেক আগেই। প্রতিবেশি রাজ্জাক সরকারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ তারা। তার ছেলে মোস্তাকিন সরকার এলাকার চিহিৃত সন্ত্রাসী। প্রতিবেশি আইন উদ্দিন সরকার জানান, মাত্র দুই শতক জমির বিরোধের দ্বন্দ্বে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার দিন দুই পক্ষের মধ্যে বেশ মারামারি হয়। এসময় নার্গিস বেগমের ছোট ছেলে মোস্তাকিন সরকারের মায়ের কানের দুল ছিড়ে ফেলে। এরপরই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে বেপরোয়া হয়ে উঠে মোস্তাকিন সরকার।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল জানান, হামলার প্রকৃত কারণ চিহিৃত করতে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ঘটনায় জড়িত মোস্তাকিন সরকারকে গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
তিনি আরো জানান, এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। তবে তার আগে দুপক্ষের বিরোধ নিয়ে থানা ও আদালতে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
ফম/এমএমএ/