—যুবক অনার্য
তোমার বাড়ির সামনে পুস্কুনি-পাড়
দিনে দুই একবার বারান্দায় আইসা
তুমি রোইদ পোহাইতা
গ্রিলে শুকা দিতা জামা জাপড়
আমি সারাদিন পুস্কুনির পাড়ে
দাঁড়াইয়া থাকতাম
তুমি যে সময়টা আসবা তোমারে যেনো
এক নজর দেখতে পারি
প্রথম প্রথম তচ্ছিল্যের ভাব দেখাইতা কপালে বিরক্তি – কপট
তোমারে এক নজর দেখতে পাইতাম
সেইটাই তো স্বর্গ আমার
এর বেশি কিছু চাওয়ার দুঃস্বপ্ন
আমার নাই।
দিন যায় মাস যায়
কপট বিরক্তির ভাঁজ মুইছা যায়
তোমার গোলাপি ঠোঁটে ক্যামন একটা আশ্চর্য রকমের হাসি
আমার ভিতরে সমস্ত শিরা উপশিরা
কাঁইপা উঠে।
দিন যায় মাস যায়
একদিন তোমারে পালকি কইরা
দূরের গেরামে লইয়া যায় দূরের মানুষ
আমি কিন্তু পুস্কুনি- পাড় ছাড়ি নাই
দাঁড়াইয়াই থাকি
কবে না কবে তুমি
শ্বশুর বাড়ি থেইকা বাপের বাড়ি আসো – সেই বাড়ি যার সামনে
আমার মতো এক আউলা মানুষ
জীবন উড়াইয়া দেয় ধলপহরে
আর উজানি হাওয়ায়।
তুমি শ্বশুর বাড়ি থেইকা আসো ঠিকই
কিন্তু বারন্দায় আসো না আগের মতো
রোইদ পোহাইতে প্রতিদিন
যখন আসো ঘোমটা পরা
তোমার চান্নি- মুখ ভালা কইরা
দেখাই মুশকিল
গোলাপি ঠোঁট আছে কিন্তু ঠোঁটে
আত্মা কাঁপাইন্না হাসি নাই
তবু আমার আত্মা কাঁইপা উঠে।
দিন যায় মাস যায়
ঘটনা কানাকানি হয়
আমারে সাবধান কইরা কয়
আমি যেনো পুস্কুনি-পাড়
দাঁড়াইয়া না থাকি
আমি দাঁড়াই নাই
মাত্র কয়েকটা দিন
তারপর আবার শুরু
সেই যে শুরু আর থামি নাই
কিন্তু গেরামের মানুষ আমারে আর
কিছুই কইতো না শুধু আমার নাম
হইয়া গেলো খাড়াইন্না পাগল।
আমি বুঝি না
তোমারে দেখতে চাওয়ার সঙ্গে
পাগল ঠাওরানের সম্পর্ক কী
মাইনসে আমারে পাগলা কয়
আমি তো জানি আমি পাগল না
আমি আসলে বেলাইজ্জা প্রেমিক
পরাণের পাখি, তোমারও কি আমারে
পাগল মনে হয়!
অবশ্য তুমি আমারে পাগল মনে করলেও আমার সাত কপাইল্লা সুখ
মনে করা মানেই তো মনে রাখা
মাইনসের চোখে পাগল না হইলে
দাঁড়ান যায় না পুস্কুনি-পাড়,
দেখা যায় না স্বর্গের লাহান জ্বইলা উঠা তোমারে।
শুনতাছি তুমি নাকি এখন আর
বারান্দায় আসো না
আমি কিন্তু তোমারে ঠিকই দেখি
দেখি -রোইদ বারান্দা গ্রিল
স্বর্গের লাহান তুমি।
দেখি – পুস্কুনির পাড়ে এক আউলা মানুষ মনের পিঞ্জিরায় প্রেম বাইন্ধা
জীবন উড়াইয়া দেয় ধলপহরে
আর উজানি হাওয়ায়।
পরাণের পাখি
প্রেম নয়,
আজকাল বেলাইজ্জা প্রেমিকেরা
প্রেমকে পোড়ায়।